সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সকালে সুপ্রিম কোর্টে তো, দুপুরে কলকাতা হাই কোর্ট৷ বিকেল গড়াতেই আবার বারাসত আদালত৷ শুক্রবার দিনভর নানা আদালতে দৌড়েও আগাম জামিন পেলেন না রাজীব কুমার৷ এদিকে আবার এদিনই রাত বারোটার পরই শেষ হয়ে যাবে আইনি রক্ষাকবচের মেয়াদ৷ প্রশ্ন উঠছে, আইনি রক্ষাকবচের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরই কি তবে গ্রেপ্তারির মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই মুখিয়ে রয়েছেন সকলেই৷
সারদা মামলার নথি লোপাটের অভিযোগ উঠছে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে৷ সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই মাসকয়েক আগে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি৷ নির্বাচনের মাঝে আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে রাজীব কুমারের ইস্যু৷ গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন রাজীব কুমার৷ রায়দানের সময় বিচারপতিরা জানিয়েছিলেন, সারদা মামলায় তদন্তের প্রয়োজনে সিবিআই আইনি পদক্ষেপ করতে পারবে৷ তবে রাজীব কুমারও সাতদিন আইনি সুরক্ষা নেওয়ার সময় পাবেন। এই সাতদিন গ্রেপ্তার করা যাবে না তাঁকে৷ মাঝে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া আইনি রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন রাজীব কুমার৷ তিনি সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চের কাছে আবেদনও জানিয়েছিলেন৷ কিন্তু রাজ্যের শীর্ষ পুলিশকর্তার আবেদন শুনতে রাজি হননি বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
[ আরও পড়ুন: কবিতায় প্রতিক্রিয়া, ভোটের ফলপ্রকাশের পর মুখ্যমন্ত্রীর কলমে এল ‘মানি না’]
শুক্রবার সকালে বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে রাজীব কুমারের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ কলকাতা হাই কোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে৷ বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, ‘‘আপনি একজন শীর্ষ পুলিশকর্তা। আপনি বহু তরুণ আইনজীবীর থেকে আইন ভাল বোঝেন। আপনার বোঝা উচিত যে ইতিমধ্যেই প্রধান বিচারপতি আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন আইনি সুরক্ষার জন্য নিম্ন আদালতে যেতে।’’ আপাতত কলকাতা হাই কোর্টে চলছে আইনজীবীদের কর্মবিরতি৷ তার মাঝে কীভাবে আগাম জামিনের আবেদন করা যাবে, সেটাই চিন্তায় ফেলে রাজীব কুমারকে৷ সর্বোচ্চ আদালতে সেকথা জানান তিনি৷ তবে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিরা তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন নিম্ন আদালতের আইনজীবীদের কর্মবিরতির দায় তাঁদের নয়৷
[ আরও পড়ুন: দলবিরোধী কাজের অভিযোগ, তৃণমূল থেকে নির্বাসিত শুভ্রাংশু রায়]
আগাম জামিন নিতে এদিন দুপুরে কলকাতা হাই কোর্টে জামিনের আরজি করেন রাজীব কুমার৷ ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টে বার কাউন্সিলের সদস্যরা স্থির করেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে৷ তবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন আইনজীবীরা৷ একাংশের দাবি, শুধুমাত্র রাজীবের আগাম জামিনের আবেদনের জন্য কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন না তাঁরা৷ আরেক পক্ষ বার কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি হয়ে যান৷
তবে এই টানাপোড়েনের জেরে বেশ খানিকটা সময় নষ্ট হয়৷ তাই বাধ্য হয়ে বারাসত আদালতে চলে যান রাজীব কুমার৷ কিন্তু সেখানেও কর্মবিরতির যুক্তিতে অনড় আইনজীবীরা৷ বাকবিতণ্ডার জেরে আগাম জামিনের আবেদনপত্র জমা দিতে বেশ দেরি হয়ে যায় রাজীব কুমারের৷ শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত সোমবারের আগে আগাম জামিনের আবেদন করতে পারবেন না তিনি৷ শুক্রবার রাত ১২টার পরই শেষ হয়ে যাবে আইনি রক্ষাকবচের মেয়াদ৷ সেক্ষেত্রে আগাম জামিন না হওয়ায় মধ্যরাতেই রাজীব কুমারের গ্রেপ্তারির আশঙ্কা যে আরও কয়েকগুণ বাড়ল, তা বলাই বাহুল্য৷
The post একাধিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়াই সার, আগাম জামিন অধরা রাজীব কুমারের appeared first on Sangbad Pratidin.