স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে ‘বাইপাস’ করে, বিরোধীদের প্রতিবাদ অগ্রাহ্য রপে রাজ্যসভায় পাশ করিয়ে নেওয়া হল মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নিয়োগ, মেয়াদ, বেতন ও পেনশন সংক্রান্ত বিল।
গত ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এম জোসেফের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে নির্বাচনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ শুধুমাত্র কেন্দ্রের ইচ্ছায় হবে না। এই নির্বাচন করবে একটি কমিটি। যার সদস্য হবেন দেশের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা। কোনও ক্ষেত্রে যদি সংখ্যার হিসাবে লোকসভায় বিরোধী দলনেতা না থাকে, তাহলে বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতা থাকবেন কমিটিতে। তাদের সুপারিশ মেনে কমিশনার নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। অথচ এদিন রাজ্যসভায় যে বিল পাশ করানো হল, তাতে এই মনোনয়ন কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হল দেশের প্রধান বিচারপতিকে। তাঁর বদলে রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীকে। কেন্দ্রের এই প্রস্তাব নিয়ে উচ্চকক্ষে তুমুল প্রতিবাদ করেন বিরোধী দলের সাংসদরা। তাঁদের
বক্তব্য, এর ফলে সুপ্রিম কোর্টকে অপমানিত করা হল।
[আরও পড়ুন: বছরশেষেই ছুটবে নিউ গড়িয়া-রুবি রুটে মেট্রো! মোদির হাতে উদ্বোধনের সম্ভাবনা]
মঙ্গলবার রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জহর সরকার বলেন, “এই বিল দেশের অবাধ ও সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।” তাঁর বক্তব্য, আদতে এই বিল পাশ করিয়ে রিগিংকে বৈধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যেভাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদকে মন্ত্রকের সচিবের থেকেও নিচে নামানো হচ্ছে, তার প্রতিবাদও করেন তৃণমূল সাংসদ। কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, “এটি স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত। এর উদ্দেশ্য ভারতীয় গণতন্ত্রে বিপর্যয় আনবে। যার ফল হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।” আম আদমি পার্টি (আপ) সাংসদ রাঘব চাড্ডার মতে, “এবার থেকে নিজেদের পছন্দমতো যাকে-তাকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার করে ফেলতে পারবে কেন্দ্র।”
বিরোধীদের বিভিন্ন বক্তব্যের মধ্যে সবথেকে বেশি আপত্তি ছিল, প্রধান বিচারপতির বদলে আরও এক মন্ত্রীকে নির্বাচন কমিটির সদস্য করায়। তাদের দাবি, আদতে নিরপেক্ষতা ভুলে কমিটিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় করতে চেয়েছে কেন্দ্র। বিরোধীদের প্রতিবাদের ব্যারিকেড সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে পার করে যায় সরকার। ধ্বনিভোটে রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যায় বিল। ভোটাভুটির সময় প্রতিবাদে ওয়াকআউট করেন বিরোধী সাংসদরা। ওড়িশার ক্ষমতাসীন বিজু জনতা দল (বিজেডি) বিলকে সমর্থন করেছে।