সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিজয় দিবসের আনন্দে মাতোয়ারা বাংলাদেশ (Bangladesh)। দেশজুড়ে রয়েছে উৎসবের আমেজ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই জয়ে প্রধান ভূমিকায় ছিল ভারতই। সেই বন্ধুত্বকেই যেন আরও মজবুত করতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: বাতাসে বিষ! বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে দূষণ তালিকায় শীর্ষে ঢাকা]
আজ বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিসেনা ও ভারতের মিত্রবাহিনী যৌথভাবে যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা লাভ করে। নয় মাসের এ যুদ্ধে বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ মানুষ ও ভারতের ১৭ হাজারেরও বেশি সেনা শহিদ হন। পাক বাহিনীর হাতে চরম লাঞ্ছনার শিকার হতে হয় অন্তত ১০ লক্ষ মহিলাকে। ভারতের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও রক্তের বদলে বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির দিন আজ। এবারের বিজয় দিবসকে গৌরবান্বিত করেছে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের উপস্থিতি। বিজয় দিবসের ৫০ বছর উপলক্ষে ঢাকার শের-ই-বাংলা জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ কুচকাওয়াজে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশসহ ৮টি দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যরা এ কুচকাওয়াজে অংশ নেন। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও স্যালুট গ্রহণ করেন।
এদিন সূর্যোদয়ের সময় ঢাকার তেজগাঁও পুরোন বিমানবন্দর এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়ছে। সন্ধ্যায় আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে ভবনগুলিকে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলি জাতীয় পতাকা ও বিভিন্ন পতাকায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
বিজয় দিবসের ঊষালগ্নে রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌঁছেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রথমে স্মৃতিসৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। সকাল ৭টা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামি লিগ, ছাত্রলিগ, যুবলিগ, কৃষক লিগ, বিএনপি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাসদ, বাসদ ও ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব ড্যাব-সহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন দলে দলে স্মৃতিসৌধের শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এসময় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব বয়সী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দেওয়া ফুলে ফুলে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধ। নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে অনেকে সাভার স্মৃতিসৌধে যান।