সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাসিরুদ্দিন শাহের উদ্বিগ্নতায় ক্ষুব্ধ যোগগুরু বাবা রামদেব। গত কয়েকদিন ধরেই দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্য সমালোচনা করছেন নাসিরুদ্দিন। বুলন্দশহরের ঘটনা নিয়ে অভিনেতার অভিযোগ, কোথাও মানুষের মৃত্যুর থেকে গরুর মৃত্যু নাকি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাতাসে ধর্মের বিষ মিশছে বলেও অভিযোগ তোলেন। রবিবার তার প্রতিবাদ করলেন রামদেব। জানালেন, সব দেশেই অসহিষ্ণুতা বা হানাহানি আছে। কিন্তু ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার অভিযোগ তোলা মানে নিজের দেশকেই অসম্মান করা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও সাফ জানিয়ে দেন, কোনও অসহিষ্ণুতা নেই। সবথেকে শান্তিপূর্ণ দেশ ভারত।
[‘নাসিরুদ্দিন বিশ্বাসঘাতক’, অভিনেতাকে পাকিস্তানের টিকিট দিল নবনির্মাণ সেনা]
বিরাট কোহলি প্রসঙ্গে বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা প্রথম সওয়াল তোলেন। অস্ট্রেলিয়া টেস্টে ভারত অধিনায়কের বিরোধিতা করে তিনি জানান, বিশ্বসেরা হলেও বিরাট অভদ্র ক্রিকেটার। বিরাটের অনুরাগীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মন্তব্যের নিন্দা করেন। তাঁদের মতে, অস্ট্রেলিয়ার মতো টিমের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে বিরাট যা করছেন, ঠিক করেছেন। এরপরই দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন নাসিরুদ্দিন। তিনি বলেন, “আমি তো আমার ছেলেমেয়েদের ধর্মশিক্ষা দিইনি। আমি মনে করি, ভাল ও খারাপের সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। যদি কয়েকদিন পর ওদের কেউ বা কারা ঘিরে ধরে কী ধর্ম জানতে চায়, ওরা উত্তর দিতে পারবে না। হাওয়ায় বিষ ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই আইন হাতে নিচ্ছে। অনেক জায়গায় গরুর মত্যু পুলিশ অফিসারের মত্যুর থেকে বড়। দেশের এই অবস্থা এখনই বদলাবে না। তবে এই পরিস্থিতির জন্য ভয় লাগে না, খুব রাগ হয়। সব স্বাভাবিক মানুষের রাগ হওয়া উচিত। আমার ঘর, আমার দেশ। কে আমাকে তাড়াবে!” নাসিরুদ্দিন শাহের এই মন্তব্যকে সমর্থন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু নাসিরুদ্দিন সাফ জানিয়ে দেন, অন্য দেশের ব্যাপারে নাক যেন না গলান ইমরান। নাসিরুদ্দিন বলেন, “আমার মনে হয় ইমরানের নিজের দেশের কথা আগে ভাবা উচিত। এই বিষয়ে মাথা না গলালেও চলবে। ৭০ বছর স্বাধীন হয়েছে দেশ। আমরা জানি, কীভাবে আমাদের সমস্যা মেটাতে হয়।”
[নাসিরুদ্দিনকে হাতিয়ার করে সংখ্যালঘু ইস্যুতে মোদি সরকারকে তোপ ইমরানের]
শনিবার রাজস্থানে আজমের সাহিত্য উৎসবের এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল বলিউড অভিনেতার। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী দলগুলোর প্রতিবাদে সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেননি তিনি। ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন রাজস্থানের নয়া মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। এদিকে দেশের অসহিষ্ণুতা নিয়ে এবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। লখনউয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ভারতে কোনও অসহিষ্ণুতা নেই। আমার মনে হয়, বিশ্বে সবথেকে বেশি সহিষ্ণুতা ভারতেই আছে। এদেশে সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে থাকে। এটাই ভারতকে সমৃদ্ধ করে। আর ভারত তেমনই থাকবে।” এদিকে নাসিরুদ্দিনকে আক্রমণ করেন বাবা রামদেব। তিনি বলেন, “নিজের দেশকে অসহিষ্ণু বলা অকৃতজ্ঞের মতো কাজ। অসম্মানজনকও। মানুষের ভালবাসা পেয়েই জনপ্রিয় হয়েছেন নাসিরুদ্দিন। আমি তো দেশে কোনও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার পরিবেশ দেখছি না। রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা দেখছি। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা আছে, একথা বলা মানে দেশকে অসম্মান করা।”
The post নিজের দেশকে অসম্মান করছেন নাসিরুদ্দিন, ‘অসহিষ্ণুতা’র অভিযোগে ক্ষুব্ধ রামদেব appeared first on Sangbad Pratidin.