নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ভোটের মুখে বাংলায় এসআইআরের নেপথ্যে বিজেপি ও কমিশনের আঁতাত বলেই বারবার দাবি করেছে তৃণমূল। রাজ্যসভায় এই ইস্যুতে ফুঁসে উঠলেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআরে মৃত্যুকে প্রাতিষ্ঠানিক খুন বলে মন্তব্য করলেন তিনি। এদিকে নাম না করেই তৃণমূলের মমতাবালা ঠাকুর দাবি করলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর মতুয়াদের বিপথে চালিত করছেন।
কেন ছাব্বিশের নির্বাচন দোরগোড়ায় পৌঁছনোর পর এসআইআর ঘোষণা করা হল বাংলায়? কেন ২ বছর আগে বা বিধানসভা নির্বাচনের পর হল না? এই প্রশ্ন বহুবার শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের কণ্ঠে। এসআইআরের কারণে যে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে তাঁর দায় ঠেলা হয়েছে কেন্দ্র ও কমিশনের কাঁধে। সোমবার রাজ্যসভায় এই নিয়েই আরও একবার সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "কেউ আতঙ্কিত, কেউ অসুস্থ, কেউ মৃত। এনুমারেশন পর্বে ভোটার ও বিলএও সকলেই সমস্যায়। পশ্চিমবঙ্গে ৪ জন বিএলওর মৃত্যু হয়েছে। সাধারণ মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। এগুলো প্রাতিষ্ঠানিক খুন। কেন্দ্রের শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে নির্বাচন কমিশন ২ বছরের কাজ ২ মাসে শেষ করতে গিয়ে এই পরিণাম ডেকে এনেছে। কমিশনের মতে, বিএলওরা সাধারণ মানুষের বন্ধু। কিন্তু ওরাই ভীত, সন্ত্রস্ত।" বিএলও অ্যাপ অধিকাংশ সময় কাজ করত না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ঋতব্রতর কথায়, সমস্যা নিয়ে বিএলওরা অভিযোগ জানালেন তাঁদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ কমিশনের হঠকারী সিদ্ধান্তের সাধারণ মানুষ ও বিএলও সমস্যা, এমনই দাবি তাঁর।
এদিকে এদিন নাম না করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে নিশানা করেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বলেন, "ভোটার লিস্ট পুনর্নবীকরণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা ছিন্নমূল উদ্বাস্তু বাঙালি। ওপার বাংলা থেকে ভারতে আসা মতুয়ারা ভারতে চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। মতুয়াদের ভুল বুঝিয়ে বিপথে পরিচালিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার ও এক প্রতিমন্ত্রী। অসহায় মতুয়াদের ঘরছাড়া করার উদ্দেশ্যে কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশন যৌথ ষড়যন্ত্র করছে। একবার কমিশন বলছে সংবিধানের ৩২৬ নম্বর ধারা অনুসারে ভোটার লিস্ট পুনর্নবীকরণ হচ্ছে। অর্থাৎ ১৯৫২ সালে দেশের প্রথম ভোটার তালিকা প্রকাশের সময়কে বোঝানো হচ্ছে। আবার কমিশনই বলছে যাদের ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম আছে তাঁদের নাম উঠে যাবে। ফলে মানুষ বিভ্রান্ত। যাঁদের ভোটের সরকার গড়েছে, তাঁরা যদি বৈধ ভোটার না হন তাহলে সরকারও বৈধ নয়। ভোটের পর প্রধানমন্ত্রী মতুয়াদের ছুরি মারছে।" মমতাবালা ঠাকুরের বক্তব্য শেষে তৃণমূল সাংসদরা বেশ কিছু পোস্টারও তুলে ধরেন। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সেগুলি বিতরণ করেছে।
