অর্ণব দাস: ‘মন রে কৃষিকাজ জানো না…’ অরিজিৎ সিংয়ের কণ্ঠে নবরূপে সাধক কবি রামপ্রসাদের এই গান এখন কান পাতলেই মানুষের মোবাইলে শুনতে পাওয়া যায়। বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে সাধক কবি রামপ্রসাদ সেনের রচিত গান (রামপ্রসাদী গান) ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলা সংগীত-ভাণ্ডারে শ্যামাসংগীতের প্রসঙ্গ উঠলেই পান্নালাল, কমলাকান্ত, নজরুলের পাশাপাশি রামপ্রসাদের নাম সমস্বরে উচ্চারিত হয়। বাংলার এই সাধক কবির অতুলনীয় সৃষ্টি বর্তমান প্রজন্মের কাছে বিস্মৃতপ্রায়। নতুন প্রজন্মের কাছে সেই ইতিহাস তুলে ধরতে এবার উদ্যোগী হলেন বিধায়ক সুবোধ অধিকারী।
রামপ্রসাদ নিয়ে গর্বিত বাঙালির চর্চায় প্রথমেই নাম উঠে আসে সাধকের জন্মস্থান হালিশহরের। আনুমানিক ৩০০ বছর আগে তৎকালীন কুমারহট্ট, অধুনা হালিশহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রামপ্রসাদ সেন। তাঁর জন্মভিটেকে কেন্দ্র করে হালিশহরকে এবার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী। এই মর্মে রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তরের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘বয়স হচ্ছে, এবার যাওয়ার পালা’, পার্কিং বিতর্কের মাঝেই হতাশার সুর ফিরহাদের গলায়]
প্রায় ৫০০ বছর পুরনো গঙ্গাপারের জনপদ হালিশহরের ভৌগোলিক বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একেবারে সীমানায় অবস্থিত এই শহরের একপাশে নদিয়া আবার গঙ্গা পেরোলেই হুগলি জেলা। তাই বিভিন্ন উৎসবে তিন জেলার মানুষেরই এখানে আনাগোনা লেগে থাকে। বিশেষভাবে পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শিবের গলি মেন রোডে অবস্থিত সাধক কবি রামপ্রসাদ সেনের ভিটেবাড়িতে ভিড় করেন সকলে। এবার সাধক কবির ভিটেবাড়িতে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারী। এর জন্য পর্যটন দপ্তরের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন বিধায়ক।
রামপ্রসাদের ভিটেয় সামনের দিকে এবং নাটমন্দিরে ঢোকার গেটের সামনে চারচালা একটি প্রবেশ দ্বার তৈরি করা হবে। ঘোষপাড়া মেন রোড এবং শিবের গলি মেন রোডের সংযোগস্থলে একটি তোরণ করা হবে। শিবের গলি মেন রোডের দু’পাশ, রামপ্রসাদ গঙ্গা ঘাট এবং মন্দির সংলগ্ন অঞ্চলের সৌন্দর্যায়ন করা হবে। রামপ্রসাদ ভিটের রান্নাঘর এবং শিবমন্দির সংস্কার, পার্কিংয়ের জায়গায় উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসানো-সহ ভিটেবাড়িতে এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড লাগানো হবে। কমবেশি ৯৩ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে এই কাজে। সুবোধ অধিকারী বলেন, ‘‘পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কাছে সাধক কবি রামপ্রসাদ সেনের ভিটেবাড়ি সংস্কার করে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার আবেদন জানিয়েছি। শীঘ্র যাতে এই কাজ শুরু করা যায় তার চেষ্টা চলছে।’’