নন্দন দত্ত, সিউড়ি: রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে পুড়ে ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে প্রায় রোজই নতুন নতুন তথ্য হাতে পাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল (CBI)। শুক্রবার যৌথ তদন্তে উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনে ব্যবহৃত একটি স্কুটি উদ্ধার করল জেলা পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনায় জেল হেফাজতে থাকা দশজনের মধ্যে এক নাবালককে বাদ দিয়ে বাকি ন’জনকে নিজেদের হেফাজতে নিল সিবিআই। এদিকে, সূত্রের খবর, রামপুরহাট আদালত নিহত সাত জনের দেহের ডিএনএ (DNA) পরীক্ষার জন্য দিল্লির ফরেনসিক ল্যাবরেটারিতে পাঠানোর উদ্যোগ শুরু করেছে তারা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দমকলের ওসি-সহ রামপুরহাট থানার সেই রাতে ডিউটিতে থাকা দুই কনস্টেবলকে।
গত ২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে খুন হন বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই খুনে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় হানিফ শেখকে। আদালতের নির্দেশে এতদিন তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছিল। শুক্রবার তার মেয়াদ শেষ হয়। সহকারী সরকারি আইনজীবী সুরজিৎ সিনহা জানান, এদিন হানিফকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন হানিফের কাছ থেকে সেই রাতে ব্যবহৃত স্কুটিটি বাজেয়াপ্ত করা গিয়েছে বলা জানান হয়।
[আরও পড়ুন: ‘রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আঁতাত ছাড়ুন’, সিবিআইকে তিরস্কার প্রধান বিচারপতির]
অন্যদিকে, বগটুই গ্রামে এক নাবালক-সহ দশজনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এদিন তাদের মধ্যে ন’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান হয় সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে। পুলিশ হেফাজত থেকে মূল অভিযুক্ত আনারুল হোসেন-সহ সাতজনকে সিবিআই তাদের পান্থশ্রী আবাসনে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। সঙ্গে দমকলের ওসি ও সেই রাতে রামপুরহাটের ডিউটিরত দুই কনস্টেবলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
অন্যদিকে, ওইদিন রাতেই বগটুই পূর্ব পাড়ায় সোনাই শেখের বাড়ি-সহ সাতটি পুড়ে যায়। পুড়ে যাওয়া যে দেহগুলি পরেরদিন উদ্ধার হয়, তার ডিএনএ পরীক্ষা করাতে চাইছে সিবিআই। কারণ, ঘটনার পরেরদিন মৃতদের আত্মীয়-পরিচয় দিয়ে নলহাটির কোগ্রাম থেকে শেখ আলাউদ্দিন নামে একজন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ থেকে দেহগুলি নেয়। কী করে তিনি দেহগুলি শনাক্ত করলেন, সে নিয়ে স্বজনহারাদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। তাঁদের অভিযোগ, বারবার তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের ফোন করেও তাঁরা মৃতদেহ পাননি।
[আরও পড়ুন: সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় কোভিডবিধি মুক্ত বাংলা, টানা ১০ দিন করোনায় মৃত্যুহীন রাজ্য]
সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল নলহাটি গিয়ে আলাউদ্দিন শেখের কাছে শনাক্ত করার বিষয়ে জানতে চান। তারপরেই দেহগুলির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য উদ্যোগ শুরু করে। কারণ, ইতিমধ্যে দেহগুলির ভিসেরা রামপুরহাটের মেডিক্যাল কলেজে সংরক্ষিত আছে। সেইসঙ্গে ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহ করে রাখা আছে। এবার মৃতদের আত্মীয়ের ডিএনএ সংগ্রহ করে দিল্লি ফরেনসিক ল্যাবরেটারিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে চায় সিবিআই। সেই সূত্রে সিবিআই আদালতে আবেদন করেছে বলে জানা গিয়েছে।