ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: দুই ছেলেকে হারিয়েছেন। আর কাউকে হারাতে চান না। রাজনৈতিক দলের নেতাদের কোনও প্রতিশ্রুতিই আর যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না। তাই রাতারাতি গ্রাম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল ভাদু শেখের পরিবার।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রামপুরহাট (Rampurhat Incident) ১ নম্বর ব্লকের বরশাল গ্রামের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়। এরপর রাত বাড়তেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। তিন, চারটি বাড়িতে পরপর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তাতেই পুড়ে অন্তত আটজনের মৃত্য়ু হয়েছে বলে খবর। একটি বাড়িতেই ৭ জন ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়। বড় অশান্তি এড়াতে রাতে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন ছিল। তা সত্ত্বেও এতগুলি বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটল। যাকে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। একদিকে বিজেপি গোটা ঘটনায় এনআইএ, সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে তো অন্যদিকে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, গোটা ঘটনা তদন্ত করার জন্য সিট গঠিত হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রামপুরহাট কাণ্ড: ‘আমি ব্যথিত, আপনার মন্তব্য তদন্তেও প্রভাব ফেলতে পারে’, রাজ্যপালকে জবাব মমতার]
কিন্তু যিনি চলে গিয়েছেন, তিনি তো আর ফিরে আসবেন না। তাই মনের মধ্যে এত আতঙ্ক নিয়ে আর এই গ্রামে থাকতে রাজি নয় শোকাহত ভাদু শেখের পরিবার। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা। সেই কারণেই বাক্সপ্যাঁটরা গুছিয়ে রাতারাতি অন্যত্র যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। নিহতের বাবা বলছেন, “আমি তো দুটো ছেলে হারিয়েছি। আমার যন্ত্রণা কে বুঝবে। আবার যদি একই ঘটনা ঘটে। কেউ মারা যায়। কোন নেতা বাঁচাবে তখন? এত ভয়ে ভয়ে আর থাকতে চাই না।” অগ্নিকাণ্ডে গ্রামবাসীদের মৃত্যুর ঘটনা ভিতর থেকে ঝাঁজরা করে দিয়েছে ভাদু শেখের পরিবারকে। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছেন না তাঁরা।
উল্লেখ্য, আট মাসে আগে বাড়ি ফেরার পথে খুন হয়েছিলেন ভাদু শেখের মেজো ভাই। জানা গিয়েছিল, রাস্তায় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এর পর সেই একই কায়দায় সোমবার খুন হন তৃণমূলের উপপ্রধান।