নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বগটুই গ্রামে পুড়ে নিরীহ বাসিন্দাদের মৃত্যুর তদন্তভার এবার সিবিআইয়ের (CBI) হাতে। তবে ঘটনার শুরুতেই তৎপরতার সঙ্গে রাজ্যের তৈরি SIT তদন্ত শুরু করেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে মূল অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতা আনারুল হোসেনকে (Anarul Hossain) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার আনারুলকে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে আনারুল জোর গলায় বলেন, ”আমি নির্দোষ, আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আদালতে দাঁড়িয়ে সব জানাব।” এদিকে এই ঘটনায় তদন্তভার পাওয়ার পরই পুরোদমে কাজ শুরু করেছে সিবিআই। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে। শনিবারই ঘটনাস্থলে যেতে পারেন তদন্তকারীরা।
রাজমিস্ত্রি থেকে পেশা বদলে রাজনীতির ময়দানে পা রাখার পরই চমকপ্রদ উত্থান আনারুল হোসেনের, যা জেলার রাজনীতিতে বেশ নজর কেড়েছিল। শোনা যায়, অনুব্রতর গড়ে থেকেও বগটুই গ্রাম ও আশেপাশে নিজের মতো করে সংগঠন করতেন আনারুল হোসেন (TMC Leader Anarul Hossain) । সোমবার রাতে বগটুই গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাকি তার নেতৃত্বেই ঘটেছিল, এমন অভিযোগই করেছে সর্বহারা পরিবারগুলো। আর তারপর বৃহস্পতিবার বগটুই গ্রামে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে আনারুলকে গ্রেপ্তারির নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তারাপীঠের একটি হোটেল থেকে আনারুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও তাঁর দাবি, গ্রেপ্তার নয়, ‘দিদি’র নির্দেশ মেনে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: সেবক সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার শুটিং ইউনিটের সদস্য, ক্লোজ স্থানীয় ফাঁড়ির ওসি]
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পর থেকেই দাবি করেছিলেন, তিনি দোষী নন, তিনি ঘটনার সময় গ্রামে ছিলেন না, ছিলেন হাসপাতালে। আদালতে দাঁড়িয়েও বারবার তিনি সেই দাবিই করেছেন। তাঁর আইনজীবীও এর পক্ষে যুক্তি সাজিয়েছেন। তবে সওয়াল-জবাবের পর বিচারক আনারুলকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের (PC) নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, সিটের থেকে রামপুরহাটের এই ঘটনার সমস্ত নথি চাওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে। সূত্রের খবর, থানায় দায়ের হওয়া এফআইআরের ভিত্তিতেই প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। খুনের চেষ্টা, খুন, অগ্নিসংযোগ, অশান্তির চেষ্টার মতো ধারায় মামলা হয়েছে।