সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঘের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড! এমন আবার হয় নাকি! কিন্তু সেটাই এবার হতে চলেছে রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানের টি-১০৪ নামে এক বাঘের ক্ষেত্রে। কোন অপরাধ? সে বারবার মানুষ খুন করেছে। তাতেই শেষ নয়। নিজের প্রজাতির সঙ্গেও বনিবনা নেই তার।
জাতীয় উদ্যানের কর্মীদের কথায়, বাঘটি স্বভাবে ভীষণই উগ্র। কাউকে দেখলেই সহজাতভাবে তেড়ে যাওয়াই তার স্বভাব। তাই তার সঙ্গে প্রায়ই লড়াই বাধছিল এলাকার অন্য বাঘেদের। কিন্তু প্রবল শক্তিশালী টি-১০৪-এর সঙ্গে লড়াইয়ে এঁটে ওঠাও মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। তাই এহেন দক্ষিণরায়ের ভয়ে কয়েকটি বাঘ নিজেদের এলাকা ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছিল অগভীর জঙ্গলে, জনবসতির কাছাকাছি এলাকায়। ফলে রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন গ্রামের মানুষ। তাঁরা বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। বাঘকে বাগে আনতে না পেরে তাই শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জঙ্গলের চিফ ওয়ার্ডেন। বাঘটিকে আজীবন খাঁচাবন্দি করে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাঘটিকে পরিচিত এলাকা থেকে সরিয়ে অন্যত্র নির্বাসন দেওয়ার অনুমতিও চাওয়া হয়েছে জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে।
[আরও পড়ুন: ‘ইডিই সবচেয়ে বিশ্বস্ত এজেন্সি’, সিবিআইয়ের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে নিজের বক্তব্যে অনড় দিলীপ]
দীর্ঘদিন ধরেই রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যান (Ranthambore National Park) থেকে বাঘটিকে সরানোর দাবি উঠেছিল। পর্যটকদের আক্রমণ করার স্বভাবের জন্য এবং অন্য বাঘেদের ভয় দেখানোর অভ্যাসের জন্য বাঘটি সকলেরই অপছন্দের তালিকায়। বন মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০১৯ সালেই বন্দি করা হয় টি-১০৪কে। তার আগেই সে পর্যটক-সহ তিনজনকে হত্যা করেছিল। তবে বন্দি হওয়ার পরও তার স্বভাব বদলায়নি। রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানে বহু বাঘের সঙ্গেই লড়াই চলত তার।
বাঘ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের বাঘগুলি মিশুকে প্রকৃতির নয়। নিজের প্রজাতির অন্য বাঘের সঙ্গে মিলমিশ করে থাকা এর স্বভাবে নেই। তাই এরা হিংস্র প্রকৃতির এবং একা থাকতেই পছন্দ করে। সেটা বুঝতে পারার পরই রণথম্ভোর থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাঘটিকে। তাকে আপাতত কম পর্যটক অধ্যুষিত মুকুন্দ্র হিলস ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের দারা পাহাড়ি এলাকায় খাঁচাবন্দি করে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাঘটি সেখানে বিশেষ ক্ষতি করতে পারবে না বলে অনুমান চিফ ওয়ার্ডেনের। এ ব্যাপারে জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠিও লিখেছেন তিনি।