বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: দুর্গাপুজোকে ইতিমধ্যেই হেরিটেজ ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো। এবার পালা ঐতিহ্যমণ্ডিত নদিয়ার শান্তিপুরের রাসের? বুধবার বিকেলে শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়িতে রাস উৎসবের সূচনা করে এমনই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
তিনি বলেন, “আমি যদি এখানে না আসতাম, তাহলে অনেক কিছুই হয়তো বুঝতে পারতাম না। কিন্তু এখানে এসে যা বুঝলাম, তাতে এটাও হেরিটেজ হতে পারে বলে আমার মনে হয়। এখানে সব দেবদেবী যেন এক জায়গায় এসে একটা সাগরের তুফান তুলেছেন। আমরা তো রথের মেলায় গিয়েছি। তেলেভাজা, পাঁপড়ভাজা খেয়েছি। জিনিসও কিনেছি। আমি এই শান্তিপুরে এসে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য দেখলাম। তার সুরটা তারা বেঁধে দিয়েছেন। এটা অনন্য। মা দুর্গার পুজো হচ্ছে। কোথাও মা কালী, কোথাও গণপতি, আবার কোথাও রাধাকৃষ্ণ, কোথাও সন্তোষী মায়ের পুজোও হচ্ছে। আমি বড় গোঁসাই বাড়িতে এসে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি দেখলাম। আমার ধারণা ছিল না যে, একটা মেলায় এত রূপ, এত বৈচিত্র। এভাবে দিনের পর দিন বছরের পর বছর ধরে গোঁসাই পরিবার এটা ধরে রেখে দিয়েছে। এটা রাজ্যের, দেশের এবং বিশ্বের ঐতিহ্য। নিজের চোখে না দেখলে আমার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হত না। ” বৃহস্পতিবার রানাঘাটের হবিবপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে জানান জেলাশাসককে।
[আরও পড়ুন: ‘ভোটে ভাল ফল করবে তৃণমূল’, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে ফের সক্রিয় মুকুল রায়?]
এদিন পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ফুলিয়ার তাঁতশিল্পী বীরেন বসাক (Biren Basak) রাধাকৃষ্ণের ছবি সম্বলিত একটি জামদানি শাড়ি মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দেন। সেই সঙ্গে শান্তিপুর পুরসভার পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ এবং ভাইস চেয়ারম্যান কৌশিক প্রামাণিকরাও মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বিশেষ উপহার তুলে দেন। উপহার পেয়ে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনারা আমাকে কত উপহার তুলে দিলেন। আমি তো কিছুই দিতে পারলাম না।”
তাঁতশিল্পী বীরেন বসাকের দেওয়া তাঁতের শাড়ি জেলাশাসকের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ হিসাবে তিনি জানান, “এটা আমি গ্রহণ করলাম। কিন্তু এটা বিশ্ববাংলার হাতে তুলে দিলাম। যাতে এই ধরনের তাঁতের শাড়ি গোটা বিশ্ববাংলার মানুষের কাছে পরিচিতি পায়। তাই এটা আমি তুলে দিলাম। দমদম বিমানবন্দরে বিশ্ববাংলার শোরুম রয়েছে। সেখানে এই শাড়িটি রাখা হবে।” এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র, আবীররঞ্জন বিশ্বাস, বিধায়ক মুকুল রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু-সহ অনেকেই।