সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার উলটো রথের মধ্যে দিয়েই শেষ হবে রথযাত্রার (Rath Yatra 2022) অনুষ্ঠান। তার আগে রথের পঞ্চম দিন পুরীতে পালিত হচ্ছে হীরা পঞ্চমী। নিঃসন্দেহে জগন্নাথ ও তাঁর স্ত্রী মহালক্ষ্মীর দাম্পত্যের এক অনিন্দ্যসুন্দর ছবিই ফুটে ওঠে এই অনুষ্ঠান থেকে। এই দিন বিশেষ ভোগ ও বৈদিক নামগান হয়।
হীরা পঞ্চমীর যে গল্প, তা সত্য়িই খুব সুন্দর। গল্পটি সংক্ষেপে এই রকম। রথের দিন তো বলরাম ও সুভদ্রার সঙ্গে মাসির বাড়ি গিয়েছেন জগন্নাথ। কেটে গিয়েছে কয়েক দিন। স্বাভাবিক ভাবেই মন ভাল নেই মহালক্ষ্মীর। স্বামী যে বলে গিয়েছিলেন, একদিন পরেই ফিরে আসবেন। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম দিন ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল তাঁর। গুণ্ডিচা মন্দিরে উপস্থিত হলেন পালকি চড়ে।
[আরও পড়ুন: ‘ঘৃণা ছড়ানোর যন্ত্রে পরিণত হয়েছে ভারত’, বিতর্কের মধ্যেই মন্তব্য ‘কালী’ তথ্যচিত্রের পরিচালকের]
এদিকে জগন্নাথ খবর পেয়ে গিয়েছেন স্ত্রী আসছেন। তিনি মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই এবার মহালক্ষ্মী আরও রেগে গেলেন। এরপর তিনি জগন্নাথের রথ নান্দীঘোষের কিছু অংশ ভেঙে দেন। এই প্রথাকে আজও পালন করা হয়। এর নাম রথভঙ্গ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁর অভিমান ভাঙে। কিছুটা অনুতপ্তও হন দেবী। তাই আধভাঙা রথটিকে ওখানেই রেখে তিনি ফিরে যান। প্রধান সড়ক দিয়ে নয়, অন্য একটি রাস্তা দিয়ে একা একাই নিজের বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।
এই গল্প যেন আমাদের চেনা গেরস্থালির গন্ধমাখা ছবিই ফুটিয়ে তোলে। দেবতা এভাবেই যেন ঘরের লোক হয়ে ওঠেন। আর তাই হীরা পঞ্চমীর এই প্রথা দেখতে আজও বহু মানুষ ভিড় করেন। ৯ জুলাই উলটো রথের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে রথযাত্রা। সেদিনই গুণ্ডিচা মন্দির থেকে পুরীর মন্দিরে ফিরবেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। একে বলা হয় বহুদা যাত্রা। প্রসঙ্গত, গত দু’বছর অতিমারীর ধাক্কায় পুরীর রথযাত্রায় সাধারণ ভক্তের সমাগম হয়নি। কিন্তু এবার নিষেধাজ্ঞা ছিল না। ফলে রথযাত্রায় অংশ নিতে উপস্থিত হন বহু মানুষ।