অর্ণব আইচ: ফের কলকাতার রাজপথে বেপরোয়া গতির বলি এক ব্যক্তি। ফিরল সেই রেড রোড (Red Road) কাণ্ডের স্মৃতি। আংশিক লকডাউনের শহরে ভোরবেলা মদ্যপ অবস্থায় দামী BMW-র ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কসবার (Kasba) রাজডাঙা এলাকা। আহত হয়েছেন এক কনস্টেবল-সহ দু’জন। চালক রাজদীপ শর্মাকে ধরে গণপিটুনি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
করোনার সংক্রমণ রুখতে গোটা রাজ্যে কার্যত লকডাউনের (Lockdown) পরিস্থিতি। নির্দিষ্ট সময়ে খোলা বাজা-দোকান, বন্ধ লোকাল ট্রেন, অন্যান্য গণপরিবহণও কমছে রাস্তায়। বন্ধ হয়েছে রেস্তরাঁ, বার, শপিং মল, সিনেমা হল। কিন্তু তার মাঝেও বেআইনি কার্যকলাপ চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা রাজদীপ শর্মা কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কসবা এলাকার কোনও ধাবায় গিয়েছিল। সেখানে রাতভর হুল্লোড়ের পর তাঁরা ভোরের দিকে যায় রাজডাঙায়। সেখানে এক মহিলার চায়ের দোকানে যান। কোনও কারণে তাঁর সঙ্গে বচসা হয় রাজদীপ ও তার বন্ধুদের। সেখান থেকে তখনকার মতো চলে যায় তাঁরা।
[আরও পড়ুন: লোকাল ট্রেন বন্ধের ধাক্কা, রাতারাতি মাছ ও সবজির দাম বাড়ার আশঙ্কা]
এরপর ভোর ৫টা ১০ নাগাদ গাড়ি নিয়ে ফের রাজডাঙার ওই জায়গায় ফিরে আসে রাজদীপ ও তার বন্ধুরা। রাস্তার পাশে একটি গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। বেপরোয়া গতিতে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটিকে সজোরে ধাক্কা দেয় রাজদীপের BMW। পিছনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এক কনস্টেবল। গাড়ির ধাক্কায় তিনি আহত হন। এরপর আরও গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করলে জখম হন আরও দু’জন। তাঁদের মধ্যেই তপন দে নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। কনস্টেবলকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। পুলিশের দাবি, এরপর গাড়িটি কোনওক্রমে ধরে চালককে বের করে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। কসবা থানার পুলিশের খবর দেওয়া হলে রাজদীপ-সহ তিনজনকে আটক করা হয়। আইন ভেঙে রাতে ধাবা খোলা রাখায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধাবার মালিক রোহিত রাজপুতকে।
[আরও পড়ুন: ভোটে ‘শূন্য’, শরিকি বিবাদে বামফ্রন্টের পর্যালোচনা বৈঠক যেন মাছের হাট]
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ধাবার ভিতরেই হুক্কাবার, মদ্যপান চলছিল, যেখানে রাজদীপরা গিয়েছিল। নেশা করে ওই অবস্থাতেই গাড়ি চালাচ্ছিল। ফলে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। রাজদীপ ও তার দুই বন্ধু অভিষেক দা, চন্দ্র পালকে আটক করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।