সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভ্রান্ত বিদেশনীতি। দুর্নীতিগ্রস্ত শাসক। পরনির্ভরতা এবং জঙ্গি দমনে সদিচ্ছার অভাব। বছরের পর বছর পাকিস্তানে (Pakistan) একের পর এক শাসক বদলেছে। শাসক বদলেছে। কিন্তু এই সমস্যাগুলি মেটায়নি কেউ। যার জেরে বদলায়নি ভারতের প্রতিবেশী দেশের আর্থিক পরিস্থিতি। আর্থিক দিক থেকে জিন্নাহর স্বপ্নের দেশ আজও অতল সমুদ্রে ডুবে।
আসলে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সংকট পাকিস্তানের প্রাথমিক সমস্যা। গত ৩ বছরে কোভিড (COVID-19) অতিমারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে সেই আর্থিক পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন হয়েছে।২০১৯ অর্থবর্ষে যেখানে জিডিপি (GDP) বৃদ্ধির হার ছিল ১.৯ শতাংশ, সেখানে ২০২০ অর্থবর্ষে তা আরও কমে চলে গিয়েছে ঋণাত্মক অবস্থানে। -১.৫ শতাংশ জিডিপি সংকোচন নিয়ে তথৈবচ অবস্থা হয় ইসলামাবাদের। গত আর্থিক বছরে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও, সেটা আগের বছরের ধাক্কার তুলনায় নগণ্য।
[আরও পড়ুন: ‘রাম না জন্মালে আপনাদের কী হত?’, বিজেপিকে খোঁচা শিব সেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরের]
গত বছরের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, ৫ জনের মধ্যে ৪ জন পাকিস্তানি অর্থাৎ ৮৩ শতাংশ মানুষের রোজগার কমে গিয়েছে অতিমারীর ছোবলে। তার উপর হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে এই মুহূর্তে পাকিস্তানে পেট্রলের (Petrol) দাম লিটার প্রতি প্রায় ১৫০ পাকিস্তানির রুপি। হাই স্পিড ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ১৪৪ রুপি। আর কেরোসিন বিক্রি হচ্ছে ১২৫ রুপি প্রতি লিটারে। সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতি ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। পাক অর্থনীতির বেহাল পরিস্থিতি বোঝা যায় সেদেশের মুদ্রার অবস্থা দেখলেই। এই মুহূর্তে ডলারের তুলনায় পাকিস্তানি রুপির মূল্য ১৮৩ টাকা। যা বাংলাদেশের মুদ্রার দ্বিগুণেরও বেশি। ভারতীয় টাকার প্রায় আড়াই গুণ।
এবার আসা যাক ঋণের বোঝায়। একাধিক আন্তর্জাতিক রিপোর্ট বলছে, পাকিস্তানের মাথায় এই মুহূর্তে ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তান গত তিন দশকের কিছু বেশি সময়ে ১৩ বার আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (IMF) থেকে ঋণ নিয়েছে। এবং এর বেশিরভাগটাই শোধ করতে পারেনি। যার ফলে ‘অফ দ্য কোর্স’ বা ‘বিপথগামী’ অর্থনীতির রাষ্ট্রের তকমাও জুটেছে প্রতিবেশী দেশের।
[আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে ভয়াবহ রোপওয়ে দুর্ঘটনা, ৩ পর্যটকের মৃত্যু]
ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাঁর আমলে অর্থনৈতিক দিক থেকে আরও পিছিয়ে পড়েছে পাকিস্তান। অভিযোগ ছিল, দুর্নীতিগ্রস্ত ইমরান খান (Imran Khan) সঠিকভাবে অর্থনীতি সামলাতে পারছেন না। কিন্তু বাস্তব বলছে, শুধু ইমরানের সাড়ে তিন বছর নয়, পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থার শিকড় অনেক গভীরে। বছরের পর বছর পাকিস্তানের শাসক বদলেছে, কিন্তু আর্থিক অব্যবস্থার ছবিটা একেবারেই বদলায়নি।