শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: মায়ের বদলে ছেলে, দাদার বদলে বোন। শিক্ষাক্ষেত্রে বেনজির এই শিক্ষকতার খবর প্রকাশিত হতেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল। আর তাতে বদলে গেল ছবিটা। সোমবার ডুয়ার্সের বিতর্কিত সেই স্কুলে যথা সময়ে হাজির এতদিন গরহাজির সেই শিক্ষিকা। সেই সঙ্গে উধাও ‘প্রক্সি’ দিদিমণি।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দিনের পর দিন স্কুলে আসছিলেন না দুই শিক্ষক। বদলে ‘প্রক্সি’ দিচ্ছিলেন ছেলে ও বোন। জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের পূর্ব গয়েরকাটা অ্যাডিশনাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিনের পর দিন ঘটে চলা এই ঘটনার খবর গত শনিবার সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। একজনের অবর্তমানে শিক্ষকতা করছেন পরিবারের আরেকজন। নিয়ম বহির্ভূত সেই শিক্ষকতার খবর শুনে চমকে উঠে ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্য মোহন রায়। স্কুল পরিদর্শককে ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
[আরও পড়ুন: রাজবংশী যুবককে হত্যা: কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিকের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক TMC’র]
শনিবার এই খবর সামনে আসার পর সোমবার বদলে গেল ছবি। অসুস্থ মা শিক্ষিকা মণি পালবোসের জায়গায় ‘প্রক্সি’ দিতে এদিন আর ছেলে নয়, সশরীরে উপস্থিত হয়ে ছিলেন মণি পালবোস নিজে। জানান, প্রায় সাত মাস ধরে অসুস্থ বলে স্কুলে আসতে পারছিলেন না। ছেলে স্কুলে আসতেন। তবে ক্লাস নিতেন না। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে গল্প করত বলে দাবি তাঁর। তবে এদিনও আসেননি অসুস্থ বলে দাবি করা আর এক শিক্ষক সুদীপ্তকুমার দে। তার জায়গায় ‘প্রক্সি’ দেওয়া বোন রূপা দে-কেও এদিন দেখা যায়নি স্কুল চত্বরে।
এবিষয়ে এদিনও কোনও মন্তব্য করতে চাননি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সঞ্চালী গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, যা বলার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেই বলবেন তিনি। এদিকে ঘটনা সামনে আসতেই তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা দপ্তর। স্কুল পরিদর্শক শ্যামল চন্দ্র রায় জানান, কেনও এমন ঘটনা। কার নির্দেশে একজনের বদলে আর এক জন শিক্ষকতা করছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি এস আই এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছ থেকে আলাদা আলাদা করে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে এক্ষেত্রে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।