shono
Advertisement
Rath Yatra

মুঘল আমল থেকেই পুরীর রথের চাকা থামে সমাধির সামনে, জানুন জগন্নাথের মুসলিম ভক্তের কাহিনি

তিনি জন্মগত ভাবে মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও প্রভু জগন্নাথের উপর তাঁর ছিল অগাধ শ্রদ্ধা।
Published By: Buddhadeb HalderPosted: 06:11 PM Jun 25, 2025Updated: 06:11 PM Jun 25, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ২৭ জুন, শুক্রবার শুরু রথযাত্রা উৎসব। পুরী থেকে দিঘা, মাহেশ বা ইসকন সব জায়গাতেই নামবে লক্ষ লক্ষ ভক্তের ঢল। পুরী মন্দির থেকে মাসির বাড়ি গুচিন্ডা যাবেন জগন্নাথ। ৭ দিন মাসির বাড়িতে থাকার পর আবারও পুরীতে ফিরে আসবেন তিনি। এই রথযাত্রার গোটা দৃশ্যজুড়ে এমন বহু লৌকিক ও অলৌকিক ঘটনা ঘটে, যা ভগবানের প্রতি ভক্তের ভক্তি ও শ্রদ্ধা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

Advertisement


'আহে নীল সৈল'। এই বিখ্যাত ভজনটির কথা মনে পড়ে? প্রভু জগন্নাথের জন্য ভজন রচনা করেছিলেন সপ্তদশ শতাব্দীর উড়িয়া কবি সালবেগ। তিনি জন্মগতভাবে মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও প্রভু জগন্নাথের উপর তাঁর ছিল অগাধ শ্রদ্ধা। এমনকী প্রভু জগন্নাথের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন নিজের প্রাণ। শোনা যায় তাঁর মৃত্যুর পর রথযাত্রার সময় গুচিন্ডা যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে সালবেগের সামাধির সামনে এসেই থেমে গিয়েছিল জগন্নাথের রথের চাকা। ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই কাহিনি।

উড়িয়া ভাষার উল্লেখযোগ্য কবি নীলমণি মিশ্রের লেখা থেকে জানা যায়, মুঘল শাসনকালে সালবেগ মুঘল সালাতে কাজ করতেন। তাঁর পিতা ছিলেন মুসলিম। মা ছিলেন হিন্দু। তাদের পুত্র সালবেগ অবশ্য ইসলাম ধর্মই পালন করতেন। একবার এক যুদ্ধে অংশ নেন সালবেগ। যুদ্ধে গুরুতর আহত হন তিনি। আঘাত লেগে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় মাথায়। বৈদ্য দেখিয়ে কোনও ভাবেই ক্ষত নিরাময় হল না। এমন সময় মুঘল সেনাবাহিনী থেকে সালবেগকে বহিষ্কার করা হয়। এই ঘটনায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। ঠিক এমন সময় সালবেগের মা প্রভু জগন্নাথের স্মরণ নিতে বললেন তাঁকে। শুরু হল প্রভুর আরাধনা। দিনের পর দিন প্রভুর প্রতি সালবেগের ভক্তি বাড়তে শুরু করল। একদিন স্বয়ং জগন্নাথদেব স্বপ্নে এসে সালবেগের মাথার ক্ষত স্পর্শ করলেন। ঘুম ভেঙে সালবেগ অবাক হয়ে দেখলেন তাঁর মাথাতে আর কোনওই ক্ষত চিহ্ন নেই। সেই মুহূর্তেই তিনি পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দিকে রওনা দেন। কিন্তু বিধর্মী হওয়ায় তাঁকে মন্দিরে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়।

সালবেগ মন্দিরের বাইরে বসেই প্রভুর নাম জপ করতে থাকেন। এর কিছুদিন পর তিনি সেখানেই দেহ ত্যাগ করেন। আর তাঁর মৃত্যুর পরই ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা। রথযাত্রার সময় জগন্নাথদেবের রথ গুচিন্ডা যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে সালবেগের সমাধির সামনে এসেই থেমে যায়। অনেক চেষ্টা করেও রথের চাকা সেদিন নড়ানো যায়নি। সাতদিন একভাবে রথ সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। মন্দিরের পুরোহিত যখন এ বিষয়ে কোনও বিধান দিতে পারলেন না, ঠিক তখন সমবেত ভক্তেরা সালবেগের নামে জয়জয়কার করতে থাকেন। আর বলাইবাহুল্য সেদিন থেকে আজও রথযাত্রার সময় এই সমাধির সামনে জগন্নাথের রথ কিছুক্ষণের জন্য দাঁড় করানো হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • তিনি জন্মগত ভাবে মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও প্রভু জগন্নাথের উপর তাঁর ছিল অগাধ শ্রদ্ধা।
  • কিন্তু বিধর্মী হওয়ায় তাঁকে মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।
  • রথযাত্রার সময় জগন্নাথদেবের রথ গুচিন্ডা যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে সালবেগের সমাধির সামনে এসেই থেমে যায়।
Advertisement