সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ শুরু হবে ১৩ জানুয়ারি। প্রতি ১২ বছর অন্তর আয়োজিত হয় এই মহাকুম্ভ মেলা। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সম্মেলনে পুরাণ, অধ্যাত্মবাদের সঙ্গে মিশে রয়েছে বিজ্ঞানও!
পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবতা ও অসুরেরা মিলে যে সমুদ্রমন্থন করেছিল তাতে উঠেছিল অমৃতের কুম্ভ। আর সেই সময় প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা, ও সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে, হরিদ্বার গঙ্গায়, নাসিকের গোদাবরী নদী ও উজ্জয়িনীর শিপ্রা নদীতে বারো ফোঁটা অমৃত পড়ে। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, দেবতা ও অসুরদের যুদ্ধের সময় ফলে নদীগুলি পবিত্র হয়ে ওঠে বলে বিশ্বাস করা হয়। সেই নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ করা যায় বলেই ধারণা। দক্ষিণের সাধু আদি শঙ্করাচার্য এই মেলা শুরু করেন বলে ধারণা।
কিন্তু এটা পুরাণের ব্যাখ্যা। বলা হয়, এর সঙ্গে রয়েছে প্রাচীন বিজ্ঞানও। বহু গবেষকের দাবি, গ্রহদের অবস্থান পৃথিবীর তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে, যা ফলস্বরূপ মানুষের জৈবিক গঠনকেও প্রভাবিত করতে পারে। জৈব-চুম্বকত্বের গবেষকদের একাংশের দাবি, মানবদেহ তড়িচ্চুম্বকীয় শক্তি নির্গত করে। এবং তার চৌহদ্দির মধ্যে থাকা চার্জযুক্ত ক্ষেত্রগুলির দ্বারাও প্রভাবিত হয়। বহু পুণ্যার্থীদের দাবি, এই উৎসবে যোগ দিলে তাঁরা মনে আশ্চর্য প্রশান্তি অনুভব করে। তার পিছনে এই বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।
এও বলা হয়, বৃহস্পতি এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। ১২ বছরে সে সূর্যকে একবার পাক খেয়ে আসে। মহাকুম্ভ মেলা যখন হয়, সেই সময় বৃহস্পতি সূর্য ও চাঁদের সঙ্গে এক বিশেষ অবস্থানে থাকে যা পৃথিবীর তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রগুলিকে প্রসারিত করে।
প্রসঙ্গত, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই কুম্ভমেলার আয়োজনে কোনও খামতি রাখেনি ভারত সরকার। জাতীয় ঐক্য ও একতার প্রতীক হয়ে ওঠে এই মেলা। জাতীয় ঐতিহ্য তুলে ধরার জায়গা হয়ে ওঠে কুম্ভমেলা। একটি মেলাকে কেন্দ্র করে এত মানুষের অংশগ্রহণ আর কোনও মেলা হয় না। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো এই মেলাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজর তকমা দেয়। আজ মহাকুম্ভ এক আলাদা মাত্রা পেয়েছে।