রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: বাসন্তী পুজো উপলক্ষে আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন নদীতে মহাসমারোহে শুরু হয়েছে অষ্টমীর স্নান ও মেলা। এক এক জায়গায় অষ্টমীর স্নান ও মেলাতে এক এক রমকের লোককথা ও বিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে। আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের সলসলাবাড়িতে গদাধর নদীতে অষ্টমীর স্নান ও মেলা এবার ৮৭ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে।
১৯৩৬ সালে ওই এলাকায় বাসন্তী পুজো ও বাসন্তী অষ্টমীতে অষ্টমীর স্নান ও মেলা শুরু হয়। এই স্নান ও মেলার বৈশিষ্ট্য হল অষ্টমীর স্নান সেরে সখা-সখি পাতা হয়। অর্থাৎ স্নান করে বন্ধুত্ব করেন সকলে। শুধু তাই নয় এখানে ঠাকুরকে লবণ দিয়ে মানত করা হয়। লবণের মানত করার ফলে মানুষের মনস্কামনা পূর্ণ হয় বলেই বিশ্বাস। তবে এই এলাকায় গদাধর নদীর ভাঙনে বাসন্তী ঠাকুরের মন্দির ভাঙনের মুখে পড়ে বলে অভিযোগ মেলা ও পূজা কমিটির। প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করার পরেও বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
[আরও পড়ুন: রামনবমীতে বিপুল পুণ্যদায়ক ৫ শুভ যোগের মহাসংযোগ, জানুন বিশদে]
মেলা ও পুজো কমিটির সম্পাদক নৃপেন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, “এবার সপ্তমী থেকেই এখানে মানুষের ঢল নেমেছে। অষ্টমীতে প্রায় ছয় বিঘা এলাকায় তিলধারণের জায়গা নেই। সাধারণ মানুষ এখনও স্নান সেরে বন্ধুত্ব করেন। এখানে লবণের মানত খুব জাগ্রত। লবণের মানতে মানুষের মনস্কামনা পূর্ণ হয় বলে মানুষের বিশ্বাস। গদাধর নদীর ভাঙনে আমাদের মন্দির এলাকা ভেঙে যাচ্ছে। বারবার প্রশাসনকে বলেও কোন বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। এত মানুষের এই পূজা, স্নান ও মেলাকে প্রশাসন কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না।”
শুধু সলসলাবাড়িতেই নয়, জেলার কালজানি, ডিমা, রায়ডাক-সহ একাধিক নদীর ধারে বাসন্তী পুজো উপলক্ষে অষ্টমীর স্নান ও মেলার আয়োজন করা হয়। ফালাকাটার জটেশ্বর এলাকাতে বীরকিটি নদীতে অষ্টমীর স্নান ও মেলা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার শহর ঘেঁষা অরবিন্দনগর মা তারা শ্মশান ঘাটের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ডিমা নদীতেও জমজমাট হয়েছে অষ্টমীর স্নান ও মেলা। আলিপুরদুয়ার শহরে ঢোকার মুখে কালজানি নদীর চরেও অষ্টমীর স্নান ও মেলায় লাখো মানুষের ভিড় হয়েছে। সব জায়গাতে প্রশাসন সহযোগিতা করেছে বলে দাবি করেছে। আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান বাবলু কর বলেন, “কালজানি ও ডিমা নদীতে অষ্টমীর স্নান ও মেলাতে আমরা আলোর ব্যবস্থা করেছি। আমরা বিভিন্নভাবে এই দুই মেলা সংগঠিত ও পরিচালনায় সাহায্য করেছি।”