shono
Advertisement

মারণ ক্যানসার ছড়াচ্ছে এই নেশাগুলিও, কতটা সচেতন আমরা?

কী বলছেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়? পড়ুন, জানুন আর অবশ্যই সতর্ক থাকুন। The post মারণ ক্যানসার ছড়াচ্ছে এই নেশাগুলিও, কতটা সচেতন আমরা? appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 04:30 PM Jun 24, 2017Updated: 11:00 AM Jun 24, 2017

সুপারি, খৈনি, গুটখা, জরদা – ধূমপানের থেকেও মারাত্মক এই নেশা। ‘সুপারি কিলার’-এর মতো থাবা বসাচ্ছে শরীরে। ফল ক্যানসারের মতো মারণ রোগ। সতর্ক করলেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনলেন শুভময় মণ্ডল ও সুপর্ণা মজুমদার।

Advertisement

সিগারেট যে ক্যানসারের অন্যতম কারণ এ কথা এখন প্রায় সকলেরই জানা। না জেনে থাকলেও সিগারেটের প্যাকেটে তো লেখা থাকেই। বড় করে ছবিও দেওয়া থাকে ক্যানসারের মর্মান্তিক পরিণতির। ধূমপান রুখতে উদ্যোগী সরকারও। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সিগারেটের দাম। ফলে ব্যয়সাপেক্ষ নেশা থেকে অনেকেই সরে এসেছেন, এ কথা বলাই যায়। কিন্তু, মানুষ সৃষ্টিশীল জীব। নেশার গন্তব্যে পৌঁছতে বিকল্প রাস্তা সে খুঁজেই নেয়। আর এই বিকল্প পথেই শরীরে বাসা বাঁধছে ক্যানসারের মতো দূরারোগ্য ব্যাধি।

সিগারেট, বিড়ির মতো নেশার সামগ্রীর অন্যতম উপাদান নিকোটিন। যা রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে মানুষের ব্রেনকে উত্তেজনা জোগায়। এই উত্তেজনা কমতে শুরু করলেই মানুষ ফের নেশার তাগিদ অনুভব করে। দুই আঙুলের ফাঁকে টেনে নেয় আরও একটি সিগারেট কিংবা বিড়ি। এভাবেই ধূমপান ক্রমেই বাড়াতে থাকে, যা সৃষ্টি করে নানা অসুখ। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ক্যানসার। সাধারণত ধূমপানের ফলে যে ধরনের ক্যানসার হয়ে থাকে, তা হল গলবিল ও স্বরযন্ত্রের ক্যানসার, লাং ব্রঙ্কোজেনিক ক্যানসার ও খাদ্যনালীর ক্যানসার। ক্যানসারের এই প্রকারগুলিই জীবন বিনাশকারী বলে পরিচিত। এদের চিকিৎসাও তেমন ফলপ্রদ নয়। তবে ইদানীং সিগারেট নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতা মূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছেও। এমনকী, টেলিভিশন ও সিনেমার মতো মাধ্যমেও সতর্কবাণী প্রচারিত হচ্ছে। যার ফলে মানুষ কিছুটা হলেও ধূমপান থেকে সরে আসছেন।

[যৌনতা নিয়ে এই মারাত্মক কুসংস্কারগুলি আপনি মেনে চলেন না তো?]

কিন্তু নেশার তাগিদ যে রয়েই যাচ্ছে। আর সেই তাগিদেই মানুষ খুঁজে বার করছে বিকল্প নেশা। কী সেই নেশা? সুপারি, জরদা, খৈনি, গুটখার মতো সস্তার নেশা। যা সহজেই মেলে রাস্তার যে কোনও ছোটখাটো দোকানে। খুব বেশি খরচাও করতে হয় না, অথচ নেশাও বজায় থাকে সমান পরিমাণে। বেশ সুচারু রূপেই এগুলি পরিবেশন করা হয়। সুপারি এবং জরদার সঙ্গে আবার গন্ধদ্রব্য মিশিয়ে আকর্ষণও বাড়ানো হয়। সুন্দর প্যাকেজিং করে বড় বড় তারকারা এর প্রচারও ইদানীং করে থাকেন। কোনও বাধা তো আর সেভাবে নেই। একবার মুখের ভিতরে দিয়ে দিলেই হল। তারপর আর কারও টের পাওয়ার কথা নয়।

কিন্তু সবার অলক্ষ্যেই সস্তার এই নেশা ধীরে ধীরে নিজের কাজ শুরু করে দেয়। সিগারেটের মতোই ‘কিলার’ সুপারির মধ্যে রয়েছে Arecoline, Arecodine, Guvacine এবং Guvacoline-এর মতো ক্ষতিকারক উপাদান। যা ক্যানসারের মতো মারণ রোগকে শরীরে অন্দরে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। আর এই কারণেই ওরাল ক্যানসারের হার আজও ক্রমবর্দ্ধমান।

[নিয়মিত বডি স্প্রে ব্যবহার করেন? জানেন কী বিপদ ডেকে আনছেন?]

‘সুপারি কিলার’-এর বাড়বাড়ন্ত দেখা গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলিতেও। এমনকী, আমেরিকার এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে ওরাল ক্যানসারের শিকার হওয়া অধিকাংশ মানুষই সুপারির নেশায় আসক্ত। তাহলে এর উপায় কী? ইন্দোনেশিয়ায় একটি অভিনব উপায় নেওয়া হয়েছে বটে। সে দেশে সুপারির নেশা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে কিছু নিয়ম চালু করা হয়েছে। কেবলমাত্র মহিলাদেরই সুপারি বিক্রি করার অনুমতি রয়েছে। আর বিশেষ পোশাক পরে তা বিক্রি করতে হয়। মানুষকে সচেতন করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু প্রায় ১৩০ কোটির ভারতবর্ষে তা কেমন করে সম্ভব? কাজটা বেশ কঠিন। কারণ, প্রায় দেশের প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ সুপারির ব্যবসার উপরই নির্ভরশীল। তাই দেশের অর্থনীতির সঙ্গে এই বিষয়টি সরাসরি জড়িত। আবার মানুষকেও তো সচেতন করা প্রয়োজন। ক্যানসারের মতো মারণ রোগকে তো দিনের পর দিন বাড়তে দেওয়া যায় না। ধূমপানের মতোই তামাক সেবনেও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আর টেলিভিশন, সিনেমার, সোশ্যাল মিডিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমগুলিকে এই কাজে লাগাতে হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটা মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং নেশা নামক বস্তুটি থেকে দূরে থাকতে হবে। ঠিক এই কথাই বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা সাহিত্যিক ডা. শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।

The post মারণ ক্যানসার ছড়াচ্ছে এই নেশাগুলিও, কতটা সচেতন আমরা? appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement