সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারে (Myanmar) গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফেরানোর দাবি জানাল ভারত। পড়শি দেশটিতে চলা রাজনৈতিক চাপানউতোর ও সেনাশাসকদের উপর নজর রয়েছে বলেও রাষ্ট্রসংঘে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: সাংবাদিক খাশোগ্গির হত্যার নেপথ্যে সৌদি যুবরাজ সলমন, বিস্ফোরক দাবি আমেরিকার]
মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গে শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় ভারতের স্থায়ী প্রতিনধি টি এস তিরুমূর্তি বলেন, “মায়ানমারে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফেরানোই সব পক্ষের লক্ষ্য হওয়া উচিত। সে দেশে চলা গতিবিধির উপর আমরা নজর রাখছি।” রাষ্ট্রসংঘে তিনি আরও জানান, বিগত দশকে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করার দিকে অনেকটাই এগিয়েছে মায়ানমার। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সে দেশের ঘটনাবলি নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ভারত। আন্তর্জাতিক মঞ্চের উচিত গঠনমূলক পদক্ষেপ করে সে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফেরানো। বিশ্লেষকদের মতে, মায়ানমারের সেনাশাসকদের চিনপ্রীতি নাপসন্দ দিল্লির। সেই বার্তা টাটমাদাওয়ের কর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বার্মিজ সেনার উপর চাপ বাড়াতে সে দেশে ফের গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ দেশের দখল নেয় মায়ানমারের সেনাবাহিনী। ভোটে কারচুপির অভিযোগে বন্দি করা হয় প্রশাসক আং সান সু কি-সহ গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিনিধিদের। ‘দেশের স্বার্থেই’ এই পদক্ষেপ বলে দাবি করে সেনাবাহিনী। এমনকী, প্রথম সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সেই অর্থে কোনও কড়া পদক্ষেপও করেনি টাটমাদাও। সূত্রের খবর, দেশটির সেনাপ্রধান মিন আং হ্লাইং ও তাঁর সামরিক আধিকারিকরা মনে করেছিলেন, শুরু থেকেই সেনাশাসনে অভ্যস্থ মায়ানমারের জনতা। তাই প্রাথমিক উত্তেজনা ও প্রতিবাদ কেটে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে এর বিপরীতে দাঁড়িয়েছে ঘটনাবলী। ১৯৮৮ ও ২০০৮ সালে সামরিক জুন্টার বিরুদ্ধে হওয়ায় আন্দোলনের চাইতেও বড় আকার নিয়েছে এবারের বিক্ষোভ। স্কুল-কলেজের ছাত্র থেকে শুরু করে আমলা ও পুলিশের একাংশ রীতিমতো ‘অসহযোগ আন্দোলন’ শুরু করেছে। এবার সেই প্রতিবাদ থামাতে রাতের অন্ধকারে লাগাতার অভিযান শুরু করেছে বার্মিজ সেনা। ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখ রাতে ইয়াঙ্গনে দেশটির শাসকদল ও সু কি’র পার্টি এনএলডি’র কার্যালয়ে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। পরেরদিন একই কায়দায় রাতের গভীরে এনএলডি’র ছয় প্রবীণ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।