সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খোদ প্রধানমন্ত্রী সতর্কবার্তা দিলেও 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' চক্র এখনও সক্রিয় দেশে। এবার এই প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা খোয়ালেন দিল্লির ৭২ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়র। প্রায় ৮ ঘণ্টা ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে রাখা হয় তাঁকে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তদন্তে নেমেছে ইন্টেলিজেন্স ফিউশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অপারেশন।
বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলের তরফে জানা গিয়েছে, দিল্লির রোহিণীর সেক্টর ১০ এর বাসিন্দা ওই অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়র। তাইওয়ান থেকে ফোন করা হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। ফোনে তাঁকে বলা হয়, মুম্বই বিমানবন্দরে তাঁর নামে একটি পার্সেল এসেছে। তাতে রয়েছে নিষিদ্ধ ড্রাগ। নিজেদের মুম্বই পুলিশের অপরাধদমন শাখার আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এর পর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় ওই ব্যক্তির থেকে। শুধু তাই নয়, নিজের মোবাইলে স্কাইপ ডাউনলোড করতে বলা হয় ওই ব্যক্তিকে।
সেই মতো ওই ব্যক্তি অ্যাপ ডাউনলোড করলে ভিডিও কলে তাঁকে ৮ ঘণ্টা ধরে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে রাখা হয়। তাঁকে আইনি টানাপোড়েন থেকে রেহাই দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১০ কোটি ৩ লক্ষ টাকা একাধিক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর নির্দেশ দেয় প্রতারকরা। প্রতারিত ব্যক্তি গোটা ঘটনা পরিবারকে জানালে থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। সেইমতো তদন্তে নামে ইন্টেলিজেন্স ফিউশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অপারেশন বিভাগ। দ্রুত তদন্তে নেমে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬০ লক্ষ টাকা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই ব্যক্তির পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ব্যক্তির ছেলে ও মেয়ে বিদেশে কর্মরত তাদের টার্গেট করার হুমকি দিয়েছিল অপরাধীরা। যার জেরেই টাকা দিতে বাধ্য হন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে উদ্বেগের সুর শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গলায়। ‘মন কি বাত’ রেডিও অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, যেভাবে ডিজিটাল অ্যারেস্টের মাধ্যমে মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে তা বিপজ্জনক। তাঁর কথায়, ”প্রতারকরা ফোনে এমন পরিবেশ তৈরি করছে যে মানুষ ভয় পেয়ে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এক্ষুনি এটা করো, নয়তো গ্রেপ্তার করা হবে। আসলে পুরোটাই প্রতারণা।” এই ধরনের ঘটনায় অযথা ভয় না পেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে এই ধরনের ফোনকল রেকর্ড করার পরামর্শ দেন মোদি। বলেন, কোনও সরকারি তদন্তকারী সংস্থা অনলাইনে কাউকে ধমক বা হুমকি দেয় না। এবং এমন ফোন এলে ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইনে ফোন করার কথা বলেন। এর পর এই প্রতারণা রুখতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে।