নির্মল ধর: একটা নয়, দু’টো নয়, তিনটে নয়, চার চারটে খুন করে বসে চারজনের (দু’টি ছেলে, দু’টি মেয়ে) এক মজারু দল। তাঁরা নাকি ‘প্র্যাংকস্টার’। লোকের সঙ্গে মজা করাই তাদের নেশা এবং পেশাও। চারমূর্তির ভিডিও অনুষ্ঠান দেখে অভিভূত একজন বয়স্ক মানুষও (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়)। এক রাতে পোড়ো বাড়ি ‘মস্তি’ করতে যায় দু’জোড়া ‘প্র্যাঙ্কস্টার’ যুগল। সেখানে অতর্কিতে হাজির হয় ওই বয়স্ক ব্যক্তি। তিনিও চান তাঁদের সঙ্গে মজা করতে। কিন্তু এর মধ্যেই তিন তিনটে খুন হয়ে যাওয়ার পর বোঝা যায় বয়স্ক লোকটি আসলে এসেছেন প্রতিশোধ নিতে। এভাবেই এগিয়েছে ক্লিক (KLiKK) প্ল্যাটফর্মের চারপর্বের সিরিজ ‘প্র্যাঙ্কেস্টাইন’ (Prankestaine)।
ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের (Frankenstein) আদলে সিরিজের নামকরণ। পরিচালক সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায় সুকুমার রায়ের ছড়া শুনিয়ে শুরুটা মন্দ করেননি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রহস্য সমান ধারায় বজায় থাকে না। গল্পটা বাস্তব থেকে অনেক দূরে, সম্ভবত সাগ্নিক কোনও বিদেশি গল্প বা টিভি সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত। তা তিনি হতেই পারেন, কিন্তু সেটা বাংলা ও বাঙালির সমাজ বাস্তবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবেতো! সেটা একেবারেই হয়নি।
[আরও পড়ুন: পর্দায় সত্যজিৎ রায় হয়ে উঠতে কতটা কষ্ট করেছেন জিতু? জানালেন অভিনেতার স্ত্রী নবনীতা]
চালাক দর্শক কিন্তু দ্বিতীয় পর্ব দেখার পরই বুঝতে পারবেন বয়স্ক লোকটির মোটিভ কী। আর সেটা জানার পরেও ‘প্র্যাঙ্কেস্টাইন’ দেখার ইচ্ছেটুকু থাকে শুধু কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের শান্ত, ধীর, স্থির চলনে অভিনয়টা দেখার জন্য। তিনিই এই সিরিজের প্রধান আকর্ষণ। প্রায় অচেনা চার মুখ দীপ দে, ঈপ্সিতা কুণ্ডু, রেমো, শ্রীতমা দে প্রত্যেকের অভিনয়ই অতিরঞ্জিত।
কৌশিক ছাড়া এই সিরিজের একমাত্র আকর্ষণ জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীত ‘পুরানো সেই দিনের কথা…’র ব্যবহার। তবে একটুি বিষয়ে আপত্তি রয়েছে, তরুণ-তরুণীদের মুখের ভাষা দিয়েই যে শব্দবিপ্লব ঘটাতে হবে, তার তো কোনও মানে নেই। ওই অকথ্য শব্দগুলি না ব্যবহার করেও তো সিরিজ তৈরি করা যায়। এমন সংলাপ শুনলেই যেন ওয়েব প্ল্যাটফর্মে সেন্সরের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি মনে পড়ে। সে যাক মোটের উপর এ সিরিজ গতানুগতিক।
- সিরিজ – প্র্যাঙ্কেনস্টাইন
- অভিনয়ে – কৌশিক গঙ্গাপাধ্যায়, দীপ দে, ঈপ্সিতা কুণ্ডু, রেমো, শ্রীতমা দে প্রমুখ
- পরিচালনায় – সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়