নির্মল ধর: পরিচালক মৈনাক ভৌমিক (Mainak Bhaumik) সেই ‘আমরা’ থেকে ‘চিনি’ পর্যন্ত প্রায় দেড়ডজন ছবি করে ফেলেছেন। তাঁর কাছে এখন সিনেমা তৈরি করা ‘বাঁয়ে হাত কা খেল’ মনে হতেই পারে, কিন্তু ছবির বিষয় নিয়ে তো যথেষ্ট ভাবনা চিন্তার দরকার। তা না হলে ছবি কখনই সিনেমা হয়ে ওঠে না, হয় জনগণের ‘বই’। ‘মিনি’র (Mini Film) ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছে।
বাবা আবার বিয়ে করেছে, মা তাই বিধ্বস্ত মনে আত্মহত্যার বিফল চেষ্টা করে। কিশোরী মিনিকে দেখভালের দায়িত্ব নেয় ব্যস্ত ড্রেস ডিজাইনার মাসি। যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)। এই দুই অসম বয়সের মেয়ের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠা নিয়ে গল্প। পাশাপাশি মিমির বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে মানসিক দোদুল্যমান অবস্থা, সেটাও সামলাতে হয় তাকে। বাবা-মাকে ছেড়ে থাকা মিনি স্বাভাবিক কারণেই কিছুটা বকে যাওয়া কিশোরীর মতো ব্যবহার করে। স্কুলের হোমওয়ার্ক করে না, মারপিট করে, মাসির সঙ্গেও কথায় কথায় তর্ক ও ঝগড়া লেগে থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে সব সমস্যার নিখুঁত সমাধান হবেই এ তো জানা কথাই! হয়েছেও তাই।
[আরও পড়ুন: জমিদার ভূমিকায় ঋত্বিক, নারীবেশে জয়, চমক ইন্দ্রনীলেরও, প্রকাশ্যে ‘পরিচয় গুপ্ত’র ফার্স্ট লুক]
তবে সেই কাজটি চিত্রনাট্যে সাজাতে গিয়ে প্রায় সময়েই এ দর্শকের ধৈর্যচ্যুতির কারণ ঘটেছে বিভিন্ন ঘটনার জটিল আবর্তে। কিশোরী মনকে আরও গভীরভাবে অনুভব করার দরকার ছিল। শুধু শুধু কিছু পাকাপাকা কথা মুখে বসিয়ে দিলেই হয় না। তবে মিমি ও নতুন মুখ অয়ন্যা চট্টোপাধ্যায়ের (Ayanna Chatterjee) স্বাভাবিক ও সাবলীল অভিনয়ের কারণে কিছুটা বিশ্বাস্য হয় চরিত্র দু’টির বাঁধন।
মাসির টালমাটাল প্রেমের ব্যাপারটাকে আরও একটু কম জায়গা দিয়ে মাসি-ভাগ্নির খুনসুটি, ভুল বোঝাবুঝি ও আবার মিলমিশের ঘটনাকে বেশি গুরুত্ব দিলে ছবিটি আরও মনোজ্ঞ হতে পারত। যা হয়নি, তা নিয়ে কি আর বলা! মায়ের চরিত্রে কমলিকা, ঠাকুরমার ভূমিকায় মিঠু চক্রবর্তীর অভিনয় খুবই স্বচ্ছন্দ্য।
ভাবতে কষ্ট হয়, মৈনাকের মতো অভিজ্ঞ পরিচালক বিষয়ের ভাবনায় আটকা পড়েছেন। আবার সেই তিনিই সারা ছবি জুড়ে অন্তত ১২টি ড্রোন শট নিয়েছেন দিন ও রাতের কলকাতা শহরের। তা খুব একটা কাজে লাগলো বলে তো মনে হয় না। চলমান জীবনের আরও অনেক খুঁটিনাটি দিক রয়েছে, যেখানে জীবনের সমস্যাও রয়েছে, এবার একটু সেদিকে মৈনাক নজর ফেলুন প্লিজ।