চারুবাক: ছবির নাম ‘ইস্কাবন’ (Iskabon Movie) কেন? পরিচালক মন্দীপ সাহা প্রথম ছবিতেই রাজ্যের এমন একটি সমস্যায় হাত রেখেছেন, যেখানে এখন পোড়খাওয়া পরিচালকের ভাবনাও খুব একটা ঘেঁষতে চায় না। এই দুঃসাহস দেখানোর জন্য কিঞ্চিৎ ধন্যবাদ প্রাপ্য তাঁর। রাজনীতিকদের কথায় জঙ্গলমহলে গত কয়েক বছর ধরেই কখনও জ্বলছে, কখনও শান্ত। কিন্তু সত্যিই কি শান্ত? নাকি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি? যখন-তখন জেগে উঠতেই পারে। মন্দীপ সাহা সেই ঘুমন্ত জঙ্গলমহলের জেগে ওঠা রূপকে তুলে ধরতে চেয়েছেন এই ছবিতে। তবে ছবির নাম ‘ইস্কাবন’ কেন সেটা এই দর্শকের কাছে একটু দুর্বোধ্য।
ছবির কাহিনি অনুযায়ী, নরেনজি নামের এক জাঁদরেল মাওবাদী নেতা জঙ্গলমহলে বিপ্লবী এবং নাশকতামূলক কাজকর্ম চালাচ্ছে। তাকে ধরতে পাঠানো হয় আধা সামরিক বাহিনী। এভাবেই এগোয় ছবির গল্প। জঙ্গলের মধ্যে পুলিশ-মাওবাদীদের এনকাউন্টারের দৃশ্যগুলি জমিয়েই তুলেছেন মন্দীপ। কিন্তু গল্পের মধ্যে বিদ্রোহী গোলাপীর সঙ্গে অন্যতম নেতা সত্য এবং পুলিশের প্রেম দেখানো, এমনকী একটা গানও জুড়ে দেওয়া ছবির গতি শুধু নয়, চরিত্রও বদলে দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: উসকো খুসকো লম্বা চুল, মুখ ভরতি দাড়ি! ‘শমশেরা’ লুকে চমকে দিলেন রণবীর কাপুর]
শেষপর্যন্ত নরেনজি ধরা পড়ে কিনা, তা একটিবার হলে গিয়ে দেখাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে পরিচালকের সাহসকে তারিফ জানিয়েও বলতে হচ্ছে ছবির টেকনিক্যাল কাজ আরও আধুনিক ও উন্নতমানের হলে ভাল লাগতো। অভিনয়ে নরেনজির ভূমিকায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য খুবই সক্রিয় এবং ভাল। যদিও হাততালি বেশি পেয়েছেন সত্যের ভূমিকায় অভিনয় করা সৌরভ দাস (Saurav Das)। তিনিও মন্দ করেননি। গোলাপীর চরিত্রে অনামিকা চক্রবর্তী বেশ আড়ষ্ট। পুলিশের চরিত্রে সঞ্জু নামের নতুন মুখ একেবারেই নবিশ। পাকা অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায় সিপিএম নেতার ভূমিকায় এক কথায় দারুণ।
দুলাল লাহিড়ী, পুষ্পিতা মুখোপাধ্যায়, সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় কেবল নিজেদের ভূমিকায় পালন করে গিয়েছেন। গান? না, এই ছবিতে গানের প্রয়োজন ছিল না। দেবজ্যোতি মিশ্রর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর অবশ্য সিনেমার পরিবেশ-পরিস্থিতিকে অনেকটাই সাহায্য করেছে।
ছবি – ইস্কাবন
অভিনয় – সৌরভ দাস, সঞ্জু, অনামিকা চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, খরাজ মুখোপাধ্যায়, দুলাল লাহিড়ী, পুষ্পিতা মুখোপাধ্যায়, সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়
পরিচালনায় – মন্দীপ সাহা