রুপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: আর জি কর ইস্যুতে (RG Kar Case) রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। শাসক চাপে। মমতার অভেদ্য দুর্গে ফাটল ধরানোর স্বপ্ন দেখছে বিরোধীরা। অথচ মাঠে ময়দানে আন্দোলনে দেখা মিলছে না কারও। বস্তুত রাজ্য বিজেপির ভূমিকায় অখুশি দলের শীর্ষ নেতৃত্বই। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন, আর জি করের মতো হাতেগরম ইস্যুতে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের যা ভূমিকা হওয়া উচিত, সেটা পূরণ করতে পারছেন না বঙ্গ বিজেপির নেতারা। আন্দোলন হতে হবে আরও প্রভাবী, আরও জনমুখী!
বস্তুত, আর জি কর ইস্যুতে তথাকথিত রাজনৈতিক দলগুলির আন্দোলন পিছনের সারিতে। পথে নামছে সাধারণ মানুষ, গণসংগঠন, বুদ্ধিজীবী সংগঠন। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও বিজেপির তুলনায় বামপন্থী সংগঠনগুলিকে বেশি সক্রিয় মনে হয়েছে। সরসরি নিজেদের ব্যানারে না হলেও বহু গণসংগঠনের ব্যানারে, বা অরাজনৈতিক আন্দোলনের আড়ালে পথে নামছেন বাম কর্মীরা। সে তুলনায় বঙ্গ বিজেপি 'খাপছাড়া'। আন্দোলন যেটুকু হচ্ছে তাতেও সংহতি নেই, লোকবলও নেই।
[আরও পড়ুন: বদলার আগুনে পুড়ছে বদলাপুর! ২ শিশুর যৌন নিগ্রহের তদন্তে নামল শিশুসুরক্ষা কমিশন]
শুভেন্দু অধিকারী আগে নিজের মতো করে বিধানসভায় বিধায়কদের নিয়ে আন্দোলন করেছেন। সুকান্তকে দেখা গিয়েছে ছোটখাট সভা, মিছিলের মতো কর্মসূচিতে। আদালতের নির্দেশ শ্যামবাজার মোড়ে ধরনা কর্মসূচি চলছে বটে, তাতেও সেভাবে সাড়া মিলছে না। মহিলা মোর্চা, যুব মোর্চা রাস্তায় নামলেও বড় মিছিল বা সমাবেশ করতে পারেনি। মঙ্গলবার কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হলেও কর্মীদের উপস্থিতি কম ছিল। সূত্রের খবর, শুভেন্দুদের এই ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, "রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের চরিত্র এমন হতে পারে না। আন্দোলন করলে তা আন্দোলনের মতো করতে হবে। যাতে জনমানসে দাগ কাটা যায়।"
[আরও পড়ুন: পাকিস্তান থেকে ইরানগামী বাসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, মৃত ৩৫ পুণ্যার্থী]
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছেন রাজ্য নেতারা। স্বাস্থ্যভবন অভিযান এবং শ্যামবাজারের ধরনা কর্মসূচিকে সফল রূপদানের জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের ডাক ‘সফল’ করতে খুঁটিনাটি পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। দরকার হলে জেলা থেকে কর্মী এনে শহর ভরানোরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দলের রাজ্য নেতাদের মধ্যে সংহতি রয়েছে সেটাও দেখাতে চান শুভেন্দু, সুকান্তরা। যদিও সেটা আদৌ কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে দলের অন্দরেই বহু মানুষ সন্দিহান।