সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদের নামে জুনিয়র চিকিৎসকরা যে কর্মবিরতি চালাচ্ছেন, সেটার নেপথ্যে রাজনীতি নেই তো? এবার নবান্নে বসে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর প্রশ্ন, রাজ্য খোলামনে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা চেয়েছিল। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে উলটে শর্ত চাপানো হচ্ছে। এর নেপথ্যে কি রাজনীতি কাজ করছে? জবাব অবশ্য এসেছে চিকিৎসকদের তরফেও। তাঁদের বক্তব্য, রাজনীতির নয়, এই আন্দোলন মনুষ্যত্বের।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, মঙ্গলবার বিকাল পাঁচটার মধ্যে কাজে ফিরতে হবে জুনিয়র চিকিৎসকদের। অন্যথায় কড় পদক্ষেপ করতে পারে রাজ্য। সেই ডেডলাইন পেরিয়েছে। তবে রাজ্যের তরফে সহনশীলতা দেখানো হয়েছে। কোনওরকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়নি। দু'পক্ষের আলোচনার রাস্তা যাতে খুলে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার নবান্নই প্রথম আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। মঙ্গলবার ইমেলের মাধ্যমে জুনিয়র ডাক্তারদের আলোচনায় ডাকেন স্বাস্থ্যসচিব। তাতে সাড়া না মেলায় বুধবার ফের আলোচনার ডাক দিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের ইমেল পাঠানো হয় নবান্নের তরফে। এবার ইমেল যায় খোদ মুখ্যসচিবের তরফে। কিন্তু এবারও সাড়া দেননি জুনিয়র চিকিৎসকরা। উলটে একাধিক শর্ত চাপানো হয়েছে আলোচনার জন্য। এদিকে আমজনতার ভোগান্তি ক্রমশ বাড়ছে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে জুনিয়র চিকিৎসকদের সদিচ্ছা নিয়ে।
[আরও পড়ুন: ভাঙা হাতেই প্রতিবাদে পথে নামলেন মিঠুন, বিবেক জাগরণ যাত্রায় মহাগুরু]
এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বললেন, "সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি। আবার আজ ৩.২১ মিনিটে মেলের মাধ্যমে কাজে ফেরার আবেদন জানিয়েছিলাম। ১২-১৫ জনকে নিয়ে সন্ধে ৬টায় আসতে বলেছিলাম। আলোচনার মাধ্যমে কী কী করা হচ্ছে, তা জানানো হত। নিরাপত্তার বিষয়ে কী ব্যবস্থা করতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। আজকের মেলেও সদর্থক সাড়া পায়নি। আজকে একটা ই-মেল পেয়েছি। বৈঠকের লাইভ সম্প্রচার-সহ একাধিক দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। কোনও শর্ত রেখে আলোচনা হয় না। আমরা খোলামনে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। আমি মনে করি আলোচনা করতে ওঁদের আসা উচিত ছিল।" স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানান মঙ্গলবার নবান্নের মেইলের উত্তর এসেছে ভোর ৩.৪৫ মিনিটে। চন্দ্রিমার প্রশ্ন, "এটা কি খুব স্বাভাবিক ঘটনা? এর মধ্যে কি কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। মনে হচ্ছে তেমনই। আজকের মেইলের উত্তরে যে মেইল ওনারা করলেন, সেখানে কিছু শর্ত দেওয়া হলো। রাজ্য সরকার খোলা মনেই আলোচনায় বসতে চায়। আমরা চাই ওই মেয়েটির পরিবার বিচার পাক। কিন্তু যেভাবে শর্ত আরোপ করা হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে পিছনে কোনও রাজনীতির খেলা রয়েছে।" জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে চন্দ্রিমার আবেদন, "জুনিয়র ডাক্তারদের বলব, আপনারা রাজনীতির মধ্যে না গিয়ে এই নোবেল প্রফেশনের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিন। আসুন খোলা মনে, শর্ত দিয়ে নয়, শর্ত দিলে কিছু হবে না।"
[আরও পড়ুন: ‘খালি পেটে বিপ্লব হয় না, পুজোয় আছি, উৎসবে নেই’, অবস্থান স্পষ্ট করলেন স্বস্তিকা]
এর পালটা অবশ্য এসেছে চিকিৎসকদের তরফেও। আন্দোলনকারীদের তরফে কিঞ্জল নন্দ জানান, "সবার কোনও না কোনও রাজনৈতিক সত্ত্বা থাকে। আমাদেরও আছে। কিন্তু এই আন্দোলন রাজনীতির নয়। এটা মনুষ্যত্বের আন্দোলন।"