সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য সরকার ও জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক নিয়ে চলছে দড়ি টানাটানি। স্বাস্থ্যভবনের সামনে চিকিৎসদের অবস্থানের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার। বুধবার সন্ধেয়ও নবান্নে বৈঠকে যোগ দিলেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা। পরিবর্তে ফের নতুন করে শর্ত বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। জুনিয়র চিকিৎসকদের এই সিদ্ধান্ত 'দুর্ভাগ্যজনক' বলেই মত মুখ্যসচিবের। খোলা মনে বৈঠকে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে বলেই মনে করছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
এদিন সন্ধেয় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব বলেন, "আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিলাম। মানুষকে পরিষেবা দিক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি। আবার আজ ৩.২১ মিনিটে মেলের মাধ্যমে কাজে ফেরার আবেদন জানিয়েছিলাম। ১২-১৫ জনকে নিয়ে সন্ধে ৬টায় আসতে বলেছিলাম। আলোচনার মাধ্যমে কী কী করা হচ্ছে, তা জানানো হত। নিরাপত্তার বিষয়ে কী ব্যবস্থা করতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। আজকের মেলেও সদর্থক সাড়া পায়নি। আজকে একটা ই-মেল পেয়েছি। বৈঠকের লাইভ সম্প্রচার-সহ একাধিক দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। কোনও শর্ত রেখে আলোচনা হয় না। আমি মনে করি আলোচনা করতে ওঁদের আসা উচিত ছিল। আমি আশা করব সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো কাজে ফিরবেন। সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেবেন।" এর পর রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারও জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, "হাসপাতালের নিরাপত্তার পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কাজে ফিরুন।"
[আরও পড়ুন: ভাঙা হাতেই প্রতিবাদে পথে নামলেন মিঠুন, বিবেক জাগরণ যাত্রায় মহাগুরু]
মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "এটা অন্য কোনও ক্ষেত্র নয়। সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্র। সে কারণে বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কর্মবিরতি তুলে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা কাল ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম। আশা করেছিলাম হয়তো কাজে ফিরবেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী, অনেক শীর্ষ আধিকারিকরা আলোচনার জন্য বসেছিলেন। স্বাস্থ্যসচিবের কাছ থেকে ই-মেল গিয়েছে। নানারকম কথা বলে তাঁরা কেউ আসেননি। সাড়ে সাতটা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী বসেছিলেন। অথচ কেউ আসলেন না। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ভোর ৩.৪৫ মিনিটে ই-মেল আসে। কোনও মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরে কি এই সময়ে মেল আসা উচিত? নিশ্চয়ই কোনও রাজনীতি রয়েছে। এর পর আজ আবার মুখ্যসচিব মেল করেন। ৬টায় আসতে বলা হয়। প্রায় দু'ঘণ্টার পর একটা ই-মেল এল। বলা হল শর্তগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। মানুষ জানেন, রাজ্য সরকার খোলা মনে আলোচনায় বসতে চাইছে। পিছনে কোনও রাজনীতির খেলা রয়েছে। তাই হয়তো খোলা মনে আলোচনা চান না আন্দোলনকারীরা। রাজনীতির প্ররোচনায় কোনও পদক্ষেপ করবেন না। আদালত যা বলছে, সেই নির্দেশ মেনে নিন। শর্ত দিয়ে নয়, খোলা মনে আলোচনা করতে আসুন।" তবে এখনও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। যতক্ষণ না দাবিপূরণ হবে, ততক্ষণ কর্মবিরতি জারি থাকবে বলেই সাফ জানিয়েছেন তাঁরা।