অর্ণব দাস, বারাসত: মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিচার চাই, মাতৃপুজোয় আড়ম্বরের প্রয়োজন নেই। আর জি কর কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এমনই সুর শোনা যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের গলায়। তাদের অনেকেই দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) ক্লাবগুলির জন্য ঘোষণা করা সরকারি অনুদান ফেরাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই উত্তরপাড়া, কোন্নগরের তিনটি ক্লাব অনুদান নেবে না বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। যথাযথ বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাঙালির সেরা উৎসবে কোনও জাঁকজমক চায় না তারা। এবার সে পথে পা বাড়াল বারাসতের এক পুজো কমিটি। সরোজিনী পল্লী উন্নয়ন সমিতির তরফে সমবেত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবছর সরকারি অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা তারা নেবেন না। দুর্গাপুজোর জন্য ন্যূনতম যেটুকু আয়োজন, তা নিজেদের খরচেই করতে পারবে বলে দাবি সদস্যদের।
সরোজিনী পল্লী উন্নয়ন সমিতির সদস্য অর্পিতা চক্রবর্তীর কথায়, ''আর জি করে (RG Kar Hospital) যে ঘটনাটা ঘটে গিয়েছে, সেই নির্যাতনের বিচার কীভাবে হবে, জানি না। অপরাধীর শাস্তি কীভাবে হবে, জানি না। সেসব ভাবলে পুজোয় সরকারি অনুদান (Donation) প্রত্যাখান করে আমরা নির্যাতিতার প্রতি সমবেদনা জানাতে চাই।'' তবে কি উত্তরপাড়ার পুজো কমিটিগুলির দেখানো পথে হেঁটেই এই সিদ্ধান্ত? এই প্রশ্নের জবাবে অর্পিতা বলেন, ''তা নয়। আমরা নিজেরাই আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এবার আমাদের দুর্গাপুজোও হবে নির্যাতিতার স্মরণে। কোনও আড়ম্বর ছাড়া।''
[আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে টাইগারদের গর্জন, পাকভূমে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় বাংলাদেশের]
উত্তরপাড়ার পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক কর্মকারের বক্তব্য, ''একজন চিকিৎসকের সঙ্গে যা ঘটে গিয়েছে, প্রশাসন এখনও তার সঠিক বিচার দিতে পারেনি। কীভাবে হয়েছে, কারা করেছে, এসব কিছু জানি না আমরা। রোজ প্রতিবাদ হচ্ছে ঠিকই, তবে কাজ কতটা হচ্ছে, জানা নেই। তাই আমরা ঠিক করেছি, এবারের পুজোয় সরকারি অনুদান বয়কট করব। দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই সিদ্ধান্ত। এমনকী পরের বছরও যদি এর বিচার না মেলে, তাহলেও আমরা অনুদান বয়কট করব। যেটুকু পুজোর জন্য দরকার, সেই খরচ আমরা নিজেরাই করে নেব। এবার আড়ম্বর নেই। খাওয়াদাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ।''
[আরও পড়ুন: নারী নির্যাতনে কঠোরতম শাস্তি হবেই! নতুন আইন প্রণয়ণে রাজ্যকে সহায়তার বার্তা মোদির]
বারাসতের (Barasat) সরোজিনী পল্লি উন্নয়ন সমিতির পুজোয় প্রতি বছর তিনদিন ধরে খাওয়াদাওয়া হয়, একদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হয়। কিন্তু এবছর সব বন্ধ। নির্যাতিতার স্মরণে এবারের দুর্গাপুজোয় তাদের মণ্ডপে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হবে। আর এভাবেই তারা নিজেদের প্রতিবাদ জারি রাখতে চাইছেন।