shono
Advertisement
RG Kar Issue

রাজপথ ছাড়ি নাই থেকে আমরা বিভ্রান্ত! 'দ্রোহকাল' নিয়ে কী বলছেন দেবলীনা-সুহোত্র?

প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি আপাতত আন্দোলনে ইতি?
Published By: Akash MisraPosted: 03:14 PM Oct 23, 2024Updated: 03:48 PM Oct 23, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভয়ার সুবিচার থেকে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ঘুঘুর বাসা ভাঙার দাবি। টানা আন্দোলন, ধরনা, অনশন থেকে টাস্কফোর্স গঠন। গত মাস দুয়েকে দ্রোহের ছবি দেখেছে তিলোত্তমা-সহ গোটা রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবশেষে কেটেছে জট। আমরণ অনশন প্রত্যাহার করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যদিও তাঁদের দাবি, সরকারের কথায় নয় বরং অভয়ার বাবা-মায়ের কথায় এই সিদ্ধান্ত এবং অনশন শেষ হলেও হুমকি সংস্কৃতি, দুর্নীতি ও বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলবে। তবে সোমবারের পর ছবি অনেকটাই পালটেছে। অনেকেই মনে করছেন, যেহেতু আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি ছিলেন ডাক্তাররাই তাই, অনশন উঠতে দ্রোহে ভাটা পড়েছে। অনেকটাই থিতিয়ে গিয়েছে বিক্ষোভ। নেটদুনিয়ায়, বিভিন্ন প্রতিবাদী গ্রুপের সক্রিয়তা ম্লান হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি আপাতত আন্দোলনে ইতি? ঘটনার ঘনঘটায় কি অভয়ার বিচারের দাবিটাই চাপা পড়ে যাচ্ছে?

এই প্রশ্ন নিয়ে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের পক্ষ থেকে টলিপাড়ার অনেকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল । বেশিরভাগই চুপ থেকেছেন। দিয়েছেন ঠোঁটে আঙুল। তবে উত্তর দিয়েছেন, অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত এবং অভিনেতা সুহোত্র মুখোপাধ্যায়। এই দুজনকেই দেখা গিয়েছিল ধর্মতলার অনশন মঞ্চে। এই দুজনই শামিল হয়েছিলেন ২৪ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে।

Advertisement

দ্রোহকাল নিয়ে দেবলীনা দত্ত জানালেন, ''টাস্ক ফোর্স গঠন হওয়া আর অভয়ার বিচার, এই দুটোর মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। ব্যাপারটা এমন নয় যে, একটা হলে আরেকটা চাপা পড়ে যাবে। এটা এখন সমশব্দ। টাস্কফোর্স গঠন হওয়ার প্রয়োজনীওতা এই কারণেই যাতে আরেকটা অভয়া না ঘটে। শুধু অভয়ার বিচার ছিনিয়ে নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে আরও অভয়ার মতো ঘটনা হওয়ার রাস্তা খোলা থাকবে, তাহলে তো এই আন্দোলনের কোনও মানেই হয় না। আজকে যে এই টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে, এটার জন্য যে লড়াই, আর যে দাবিগুলো উঠেছে, সবটাই আসলে আরেকটা অভয়ার মতো ঘটনা যেন না ঘটে। এটা না হলে, এই অভয়া তো ন্যায় বিচার পেয়ে যাবে, কিন্তু আবার অভয়া ঘটবে। কারণ পরিকাঠামোতেই তো ঘূণ ধরে রয়েছে।

দেবলীনার কথায়, ''রাজপথের লড়াই শেষ হয়নি। কারণ, এই আন্দোলনের যে দশটা দাবি রয়েছে, তার প্রথমটাই হল অভয়ার ন্যায়বিচার। বাকিগুলো পরিকাঠামো সংক্রান্ত। যেগুলো নিশ্চয়ই তাড়াতাড়ি পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু এক নম্বর অর্থাৎ অভয়ার ন্যায়বিচার যদি না হয়, তাহলে রাজপথ কেউ ছাড়ছি না। নিশ্চিত করে বলছি।''

তবে অভিনেতা সুহোত্রর কণ্ঠে যেন হতাশার সুর। বরং বলা ভালো, একটু হলেও, গোটা বিষয়টা নিয়ে সুহোত্র কিছুটা বিভ্রান্ত। আন্দোলনের(RG Kar Protest) গতিপ্রকৃতি নিয়ে তাই প্রশ্ন করতেই অভিনেতার সাফ জবাব, ''আমার কাছে ব্যাপারটা খুব কনফিউজিং।'' এরপরই সুহোত্র আরও বলেন, ''এই যে নারকীয় ঘটনা(RG Kar Issue) ঘটেছে, তিনমাস হয়ে গেল। আমাদের কাছে এখনও পরিষ্কার নয় যে, প্রশাসনের কাছ থেকে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। সঙ্গে এখন যা হচ্ছে তার মধ্যে অভয়ার বিচার যাতে চাপা না পড়ে যায়, সেটাও দেখা অত্যন্ত জরুরি বলে আমার মনে হয়। ততটাই জরুরি এটা সুনিশ্চিত করা, যাতে এর পরে আর কোনও স্কুল, কলেজ, ইনস্টিটিউট, অফিস কোথাও যেন অভয়ার মতো ঘটনা আর না হয়। যাঁদের এই পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকারে রয়েছে তাঁরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে,
সেটাও জানা উচিত। অন্তত আমার কাছে এই গোটা বিষয়টা পরিষ্কার নয়।
আমার মনে হয় বহু মানুষের কাছেও পরিষ্কার নয়।''

সুহোত্র আরও বলেন, ''ডাক্তাররা অনশন প্রত্যাহার করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্যই প্রত্যাহার হল? নাকি সদর্থক কোনও রেসপন্স পাওয়ার কারণেই অনশন উঠল। আমাদের লড়াই কি আরও চালিয়ে যেতে হবে? সেটা পরিষ্কার নয়। আমার মনে হয়, কথার মধ্যে কথা হারিয়ে যাচ্ছে। জানি না কোনও সমাধান হবে কিনা। কিছু বিষয়ের অবশ্যই সমাধানের কথা এসেছে। টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে, সেটা যদি কার্যকরী হয়, খুবই ভালো ব্যাপার। আসলে এটা সুনিশ্চিত হওয়া উচিত, যাতে এরকম ঘটনা কারও সঙ্গে না ঘটে। কোনও ধরনের যৌন নির্যাতনের কথা যেন ভয় না পেয়ে প্রশাসনকে জানাতে পারে বা থ্রেট কালচারের কথা প্রশাসনকে জানাতে পারে, সেই জায়গাটা তৈরি হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর বাইরে অভয়ার বিচারের কথা যদি আসে তাহলে সেটা তো পুরোটাই সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআইয়ের জনগণকে জানানো উচিত, যে তদন্ত কোন দিকে এগোচ্ছে। মানুষ জানতে চায়, আমরা এখন কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। আমাদের কাছে সবটা পরিষ্কার নয়। শুধু অভিযোগের কথা জানতে পেরেছি মাত্র। আসলে কী হচ্ছে, আমাদের কাছে পোক্ত কোনও তথ্য় নেই।''

সুহোত্র আরও জানান, ''রাজপথ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আবার দখল হবে। এই আন্দোলন এখন প্রত্যেকটি মানুষের। আমার বিশ্বাস আন্দোলন এর পরেও সুনির্দিষ্ট পথ পাবে। আমি নাগরিক হিসেবে চাইব, এই ঘটনার যেন একটা দ্রুত সমাধান ঘটে। মানুষ খুব রেগে রয়েছে, কষ্টে রয়েছে। এর সমাধান হলে মানুষ একটু আশার আলো দেখবে।''

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এই দুজনই শামিল হয়েছিলেন ২৪ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে।
  • এর সমাধান হলে মানুষ একটু আশার আলো দেখবে।''
Advertisement