সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: দশ বছর বয়সে সাইকেল চালাতে গিয়ে পড়ে যায় শুভজিৎ। ডানহাতে গুরুতর আঘাত লাগে তার। বেশ কিছু বছর পর ধরা পড়ে ক্যানসার। কিছুদিন বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসা চলে। ছবার অস্ত্রোপচার হয় হাতে। শেষে চিকিৎসকরা জানান, প্রাণ বাঁচাতে বাদ দিতে হবে হাত। তবে পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি না থাকার কারণে ফিরে আসতে হয় শান্তিপুরের বাড়িতে। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হয় ডান হাত। তাতে মনোবল না হারিয়ে অল্প কয়দিনে বাঁ হাতে লেখা শিখে পরীক্ষায় বসে সে। তাতেই সাফল্য পেল দরিদ্র পরিবারের এই সন্তান।
[আরও পড়ুন: চাকরিহারাদের ধরনা মঞ্চ থেকে ‘চোর’ স্লোগান, অভিজিতের মনোনয়নে তমলুকে তুলকালাম]
নদিয়ার শান্তিপুরের (Santipur) হরিপুর অঞ্চলের বাসিন্দা শুভজিৎ বিশ্বাস। বাবা ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস কলকাতায় (Kolkata) দিনমজুরের কাজ করেন। মা গৃহ পরিচারিকার কাজ করেন। বাড়িতে নুন আনতে পান্থা ফুরনোর অবস্থা। মাসির বাড়ি থেকেই পড়াশোনা চালায় শুভজিৎ। কিন্তু পরীক্ষার আগেই বাদ যায় তার ডান হাত। তবে ভেঙে না পড়ে বাঁ হাতে লেখা শুরু করে সে। বসে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায়। জেদের কাছে হার মেনেছে প্রতিকূলতা। পাশ করেছে সে। এই সাফল্যে খুশি পরিবার।
শুভজিতের বাবা জানিয়েছেন, দীর্ঘ চারবছর ঠিক মতো ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে পারেননি। পরীক্ষার আগে ডান হাত বাদ যাওযায় ভেঙে পড়ে পরিবার। কিন্তু শুভজিতের ইচ্ছা ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik) দেবে। রেজাল্ট যাই হোক না কেন ছেলে পাশ করেছে, এটাই তাঁর কাছে বড় পাওনা। মাসি রেখা বিশ্বাস বলেন, "ও পড়াশোনা করতে চাইছে। আমরা ওর পাশেই আছি। তবে পড়াশোনার খরচ চালানোর অবস্থা নেই। সরকার ছেলেটার পাশে দাঁড়ালে ভালো হবে।"