সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত পাঁচ বছর ধরে খেলার সুবাদে তিনি কেকেআরের পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছেন। নিজেকে প্রমাণ করে প্রথম একাদশে জায়গাও পাকা করে নিয়েছেন। আর রবিবার গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে তাঁর অনবদ্য ইনিংসেই অবিশ্বাস্য জয় পেল কেকেআর। ঠিক ধরেছেন, কথা হচ্ছে রিঙ্কু সিংয়ের। কিন্তু এই স্বপ্নের সফরটা নেহাতই সহজ ছিল না রিঙ্কুর। কাঁটায় মোড়া পথ পেরিয়েই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন রিঙ্কু (Rinku Singh)।
উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে জন্ম বাঁ-হাতি ব্যাটার রিঙ্কুর। অফ ব্রেক বলও করতে পারেন। কিন্তু ছোটবেলায় খেলার সরঞ্জাম পাওয়া তো দূর, দু’বেলা ভাতও ঠিকমতো জুটত না রিঙ্কুর। যে পরিবার থেকে তিনি উঠে এসেছেন, সেখানে রীতিমতো যুদ্ধ করে ক্রিকেটটা খেলতে হয়েছে তাঁকে। কৃষক পরিবারের ছেলে রিঙ্কু। বাবা খানচাঁদ সিং গ্যাসের সিলিন্ডার বিলি করতেন। ছোট ছোট দু’টি ঘরে চার ভাই-বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে সংসার ছিল রিঙ্কুর। পরিবারের আর্থিক অনটন দূর করতে রিঙ্কুর দাদা ভাইকে ঝাড়ুদারের কাজে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এতেও তাঁর ২২ গজে খেলার স্বপ্নকে ধামাচাপা দেওয়া যায়নি।
[আরও পড়ুন: নববর্ষে কলকাতা পাবে আরও এক অডিটোরিয়াম! উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী, জানুন খুঁটিনাটি]
হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যেই খেলা চালিয়ে যান। ক্রিকেটকে মনের মণিকোঠায় বসিয়ে পুজো করতেন। তারই ফল মেলে ১৭ বছর বয়সে। উত্তরপ্রদেশের রাজ্য দলে ডাক পান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ২০১৬ সালে। আর তার দু’বছর পরই নাইট শিবিরে সুযোগ। কেকেআর (KKR) জার্সি গায়ে চাপিয়ে আর্থিক সংকট কাটালেও মানসিক শান্তি পাননি রিঙ্কু। খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য বারবার ট্রোলড হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু প্রতিভার বিকাশ ঘটা যেন সময়ের অপেক্ষা। আজ গুজরাটের মাটিতেই বাংলার দলের তারকা সেই সব কটাক্ষ, মশকরা আর ট্রোলের জবাব দিয়ে দিলেন তিনি।
এদিন ম্যাচের পর আবেগঘন হয়ে পড়েন রিঙ্কু। বলেন, “আমার বাবা অনেক সংগ্রাম করেছে। আমি কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসেছি। তাই প্রত্যেকটা শট সেই সমস্ত মানুষকে উৎসর্গ করতে চাই, যাঁরা আমার জন্য অনেক আত্মত্যাগ করেছেন।” রিঙ্কু, আর নাইটদের নায়ক আপনি। আপনার জন্য গর্বিত শাহরুখ খান থেকে গোটা কলকাতা। সবুরে হয়তো এভাবেই মেওয়া ফলে।