সৈকত মাইতি, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় দুঃসাহসিক ডাকাতি। বৃদ্ধ দম্পতির হাত-পা বেঁধে, ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে লুটপাট চালালো দুষ্কৃতীরা। ২০ লক্ষ টাকা গয়না ও নগদ ৪০ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে বলেই খবর। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার পশ্চিম নৈছনপুর এলাকার বাসিন্দা চণ্ডীচরণ রায়। প্রত্যন্ত গ্রামের ভিতর দেউলি হাইস্কুল সংলগ্ন কেজির মোড়ে তাঁর একটি একতলা পাকা বাড়ি রয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী। একছেলে পেশায় চিকিৎসক এবং অপরজন শিক্ষক। স্বাভাবিকভাবেই পেশার তাগিদে তাঁরা বাড়ি ছাড়া। বৃদ্ধ রায় দম্পতি থাকতেন বাড়িতে। গত শনিবার তমলুকে এক আত্মীয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। সোমবার ফিরে কোনওরকমে খাওয়া-দাওয়া সেরে উঠোনেই স্বস্তির ঘুম দেন। অভিযোগ, রাত প্রায় ১টা নাগাদ ওই বৃদ্ধ দম্পতির শোয়ার ঘরে হানা দেয় সশস্ত্র একটি ডাকাতের দল। ঘোর কাটার আগে ডাকাতের দল তাঁদের মুখে কাপড় গুঁজে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এর পরও ধারালো অস্ত্র গলায় ধরে। মাথায় ঠেকানো হয় আগ্নেয়াস্ত্র। মারধরও করা হয় তাঁদের। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ওই বাড়িতে তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। দুটো আলমারি ভেঙে নগদ প্রায় ৪০ হাজার টাকা ও প্রায় ২০ লক্ষ টাকার সোনার গহনা, কাঁসা-পিতলের বাসন নিয়ে চম্পট দেয় তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ১১ লক্ষ টাকা ট্যাক্স বাকি গাড়ির, আটক বিএমডব্লু রিমোটে খুলে চম্পট চালকের]
দম্পতির অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের দুজনের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা থাকলেও অন্যান্য প্রায় সকলেরই মুখ খোলা ছিল। তারা হিন্দিতে কথা বলছিল। তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে, গভীররাতে ৬ টি বাইকে চড়ে সশস্ত্র দুষ্কৃতীদলটি ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে হানা দেয়। প্রথমে বাড়ির পাঁচিল টপকে জানালা দিয়ে ছাদে ওঠে। এর পর ছাদের চিলেকোঠার ঘরের তালা ভেঙে দম্পতির শোওয়ার ঘরে প্রবেশ করে। তাণ্ডব চালানোর পর বাড়ির মূল দরজা খুলে তারা চম্পট দেয়। এই ঘটনার সঙ্গে ভিন রাজ্যের দুষ্কৃতীদের যোগ রয়েছে বলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। বৃদ্ধ চণ্ডীচরণ রায় বলেন, “আমরা এখনও খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।” এক আত্মীয় রাজু মণ্ডল বলেন, “যেভাবে প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যে এই দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটলো, তাতে আমরা আতঙ্কিত। বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” যদিও এ বিষয়ে তমলুকের মহকুমাপুলিশ আধিকারিক সাকিব আহমেদ জানিয়েছেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”