নব্যেন্দু হাজরা ও সুরজিৎ দেব: সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপগুলির সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ করতে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। পাথরপ্রতিমার দুটি নদীপথে চারটি ভাসমান জেটি তৈরির কাজ শেষ হলে চালু করা হবে রো রো পরিষেবা। যার জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী সোমবার প্রস্তাবিত জেটিগুলোর স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। সেখানেই তিনি এই রো রো পরিষেবা চালুর কথা জানান।
সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমা ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন দ্বীপের সমষ্টি। দ্বীপগুলো জনবসতিপূর্ণ। এক একটা দ্বীপে এক একটা পঞ্চায়েত। কিন্তু মূল ভুখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম ভটভটি। চার চাকা গাড়ি এই সব দ্বীপে পৌঁছতে পারে না। তাই এই দ্বীপগুলোর যোগাযোগে এবার রো রো পরিষেবা চালু করছে পরিবহণ দপ্তর। বিরাট বাজার, চাঁদমারী, বনশ্যামনগর, কালিবাঙ্গাল এই চারটি ফেরিঘাটের রো রো জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ছমাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। এর ফলে বড় গাড়িগুলো ওই দ্বীপে পৌঁছবে। পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে। ঐ দ্বীপের সাধারণ মানুষেরা সহজেই নদী পারাপার করতে পারবে। জেটির সাথে রো রো ভেসেলও দেওয়া হবে। এছাড়া থাকবে ওয়েটিং রুম, টয়লেট, কিছু দোকান ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: ২৮ দিন পর দত্তপুকুর বিস্ফোরণ কাণ্ডে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত]
এবিষয়ে পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ‘‘রো রো পরিষেবা চালুর ফলে প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও সহজ থেকে সহজতর হবে। বাসিন্দাদের যাতায়াতের দুর্গম পথ সুগম হবে। পর্যটকরা সহজেই গাড়িতে বঙ্গোপসাগরের খুব কাছাকাছি দ্বীপে সবুজ প্রকৃতির কাছে পৌঁছতে পারবেন। পর্যটনশিল্প গড়ে উঠলে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থারও দ্রুত উন্নতি ঘটবে।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত পাথরপ্রতিমা ব্লকের ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯ টি পঞ্চায়েত নদীবহুল এলাকায় অবস্থিত। স্থানীয় বিধায়ক সমীর কুমার জানা জানান, যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা ভেবে রাজ্য সরকার মোট ৩৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে চারটি পন্টুন জেটি তৈরি করবে। জেটিগুলো নির্মাণ করা হবে পাখিরালা নদীর ওপর অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরাটবাজারে, বনশ্যামনগর ঘাটের কাছে এবং চালতাবনিয়া নদীর ওপর বনশ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিবাঙালের ঘাট ও জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদমারি ঘাট এলাকায়। এরকম আরও কয়েকটি ভাসমান জেটি তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। এর ফলে পাথরপ্রতিমা ছটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই জেটিগুলো তৈরির জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।