সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিন আগেই রাশিয়ার (Russia) তরফে চুক্তি সই করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহে ইউক্রেনকে সহায়তা করবে মস্কো। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওডেসা বন্দরে হামলা চালাল রাশিয়া। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার দায় এড়িয়ে যেতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত হামলার দায়িত্ব নিতে হয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশকে। প্রসঙ্গত, শুক্রবারই তুরস্কের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল রাশিয়া। সেখানেই চুক্তি সই করে বলা হয়, যখন জাহাজে করে খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হবে, সেই সময় হামলা চালানো হবে না।
রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জানিয়েছেন, “ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে দু’টি মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে। তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি সামরিক নৌকা।” প্রসঙ্গত, ওডেসা বন্দরে মিসাইল হামলা হওয়ার পরেই রাশিয়ার কাছে ঘটনার সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল তুরস্ক। তারপরেই আঙ্কারার তরফে ঘোষণা করা হয়, “রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় তাদের কোনও ভূমিকা নেই বলেই জানিয়েছে মস্কো। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” অর্থাৎ, হামলা চালানোর ঘটনার সঙ্গে নিজেদের যোগ অস্বীকার করেছিল মস্কো।
[আরও পড়ুন: ঋণে ডুবেছে পাকিস্তান, দেশীয় সম্পদ বিদেশে বিক্রি করতে নয়া অর্ডিন্যান্স আনল শরিফ সরকার]
কিন্তু হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে আন্তর্জাতিক মহলে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেন,”রাশিয়া কোনও প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা রক্ষা করতে পারে না। যে কোনও ভাবে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার উপায় খুঁজতে থাকে তারা।” আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে রাশিয়া, এমন অভিযোগ তুলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, “খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ওডেসা। তুরস্কের সঙ্গে চুক্তি (Grain Deal) সই করার পরের দিনই সেখানে হামলা চালানো অত্যন্ত নিন্দাজনক।”
পাঁচ মাস ব্যপী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) মারাত্মক প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক খাদ্যের বাজারে। ইউক্রেনের বেশ কিছু বন্দর রাশিয়ার অধীনে থাকার কারণে খাদ্যসামগ্রী পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছে নানা দেশ। সেই জটিলতা কাটাতেই আলোচনায় বসেছিল রাশিয়া এবং তুরস্ক। কিন্তু চুক্তি সই করে হামলা চালানোর ঘটনায় খুবই ক্ষুব্ধ আন্তর্জাতিক মহল। রাষ্ট্রসংঘের তরফে হামলার নিন্দা করেছেন মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সব মিলিয়ে চাপের মুখে পড়ে হামলার চালানোর কথা স্বীকার করেছে রাশিয়া।