সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলে গণভোট শুরু করল রাশিয়া। শুক্রবার থেকে রুশ সেনার দখলে থাকা ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের (একত্রে দোনবাস) পাশাপাশি খেরসন ও জাপোরজাই শহরে শুরু হয়েছে ভোটদান।
গত আগস্ট মাসে দোনবাস, জাপরজাই ও খেরসন অঞ্চলে মস্কোর ‘পুতুল প্রশাসন’ গণভোটের পথ প্রশস্ত করে একটি ডিক্রি জারি করেছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধের গোড়াতেই ওই চারটি এলাকার দখল নিয়েছিল ভ্লাদিমির পুতিনের সেনা। বিশ্লেষকদের মতে, দোনবাস অঞ্চল-সহ ইউক্রেনের একটি বড় অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আকারের দিক থেকে তা প্রায় পর্তুগালের সমান। এদিকে, গণভোট নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, অধিকৃত অঞ্চলে যদি গণভোট হয়, তা হলে আলোচনার সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এমনটা কোনওভাবেই মেনে নেবে না ইউক্রেন ও তার মিত্র দেশগুলি। কিন্তু যুদ্ধে কিছুটা বেকাদায় পড়লেও সেই হুমকি উড়িয়ে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)।
[আরও পড়ুন: সেনা সমাবেশের নির্দেশের পরই ‘পুতিন হঠাও’ ডাক রুশ বিরোধীদের]
‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার থেকে অধিকৃত অঞ্চলে ভোটদাতাদের মধ্যে ব্যালট বিতরণ শুরু হয়েছে। সেখানে একটিই প্রশ্ন, ”আপনারা কি ইউক্রেন থেকে আলাদা হয়ে এমন স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি করতে চাইছেন যা রাশিয়ান ফেডারেশনে যোগ দেবে?” বিশ্লেষকদের মতে, দোনবাস অঞ্চলে মূলত রুশ ভাষী জনতার সংখ্যাই বেশি। ফলে বেশ কয়েকবছর থেকেই সেখানে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একটি লড়াই চলছিল। এবার সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছেন পুতিন। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের থেকে কৃষ্ণসাগর লাগোয়া ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ ছিনিয়ে নেওয়ার পর ওই অঞ্চলকেও ‘স্বশাসিত’ ঘোষণা করেছিলেন পুতিন।
এদিকে, এই গোটা ভোটদান প্রক্রিয়াকে লোক ঠকানো বলে দাবি করেছে ইউক্রেন (Ukraine)। কিয়েভের আধিকারিকদের কথায়, যে শহরগুলি থেকে রুশ গোলার ভয়ে লোকজন পালিয়েছে সেখানে কারা ভোট দিচ্ছে? যাঁরা প্রাণের মায়া ত্যাগ করে বাধ্য হয়ে সেখানে রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের অশেষ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে এই গণভোট সাজানো প্রক্রিয়া। এছাড়া, ইউক্রেনের অংশ দখল করলে তা রাষ্ট্রসংঘের নীতির লঙ্ঘন হবে বলে সাফ জানিয়েছে জি-৭ জোট ও অন্যান্য দেশগুলি।