সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে সত্যি হল আশঙ্কা। পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাসের জোগান বন্ধ করল রাশিয়া (Russia)। বুধবার রুশ সরকারি তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী সংস্থা ‘গ্যাজপ্রম’ জানিয়ে দেয় যে টাকা না মেলায় পড়শি দুই দেশে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: শরীর খারাপ পুতিনের! যুদ্ধের আবহে ‘অমর’ রুশ প্রেসিডেন্টকে ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা]
রয়টার্স সূত্রে খবর, গ্যাসের দাম মেটাতে রুশ মুদ্রা রুবল ব্যবহার করার দাবি জানিয়েছিল মস্কো। তবে সেই দাবিতে কান দেয়নি পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া। ফলে পড়শি দুই দেশে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। বলে রাখা ভাল, ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে বিদেশে সঞ্চিত প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের মুদ্রাভাণ্ডারে হাত দিতে পারছে না মস্কো। একইসঙ্গে, রাশিয়ার ব্যাংকগুলিকে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তারপর থেকেই, জ্বালানির দাম রুবলে মেটানোর দাবি জানিয়ে আসছে পুতিন প্রশাসন।
এই বিষয়ে রুশ সরকারি তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী সংস্থা ‘গ্যাজপ্রম’ জানিয়েছে, এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে জ্বালানির দাম মেটায়নি পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া তাই বুধবার থেকে তারা গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, রুশ সংস্থাটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে দুই দেশ যদি পাইপলাইন থেকে অবৈধভাবে গ্যাস নেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে সেই পরিমাণের গ্যাস ইউরোপের অন্য দেশগুলির জন্য বরাদ্দ অঙ্ক থেকে কেটে নেওয়া হবে। আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছিলেন যে ‘অবান্ধব’ দেশগুলিকে গ্যাসের দাম রুশ মুদ্রায় মেটাতে হবে না হলে তাদেরও জোগান বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এই ঘটনার পরে জরুরী বৈঠকে বসে ইইউ-এর সদস্য দেশগুলি। জ্বালানির বিকল্প উৎস নিয়ে কথা চলছে। বুলগেরিয়ার শক্তি-মন্ত্রী আলেকজান্ডার নিকোলোভ বলেন, “কোনও চাপের মুখেই নতি স্বীকার করব না। বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রাশিয়ার দিক থেকে ‘হুমকি’ স্পষ্ট, দরকারে গোটা ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এদিকে, রাশিয়ার এহেন পদক্ষেপে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU)। ইইউ প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন কড়া ভাষায় অভিযোগ জানিয়েছেন যে, এবার জ্বালানি জোগান নিয়ে ইউরোপকে ব্ল্যাকমেল করছে রাশিয়া। উল্লেখ্য, জার্মানি, ইটালি, ফ্রান্স-সহ ইউরোপের বহু দেশ জ্বালানির জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। এবং স্বল্প সময়ে সেই নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও প্রতিদিন জ্বালানির মূল্য বাবদ রাশিয়াকে ৪০ কোটি ডলার দেয় ইউরোপ। ফলে মস্কোর এহেন পদক্ষেপে রীতিমতো অশনি সংকেত দেখছেন অনেকে।