সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাগাতার ইউক্রেনে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়ে চলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর এই হুমকিকে আমেরিকা-সহ কোনও দেশই উপেক্ষা করতে পারছে না। সত্যি সত্যিই পুতিন ইউক্রেনে পরমাণু হামলা চালাতে পারেন- এমন একটা আশঙ্কা বিশ্বে তৈরি হয়েছে। আর সেই নীল নকশা নাকি তৈরি হয়েছে বেলারুশকে কেন্দ্র করে।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বেলারুশে ‘ট্যাকটিক্যাল নিউক্লিয়ার ওয়েপন’ বা কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করার পথে অনেক দুর এগিয়ে গিয়েছে রুশ ফৌজ। অবশ্য গত মার্চ মাসেই এই আণবিক পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন পুতিন।তারপর থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই পালটেছে। ইউক্রেনীয় ফৌজের পালটা মারে বেকায়দায় পড়েছে রুশ সেনা। ফলে পরমাণু হাামলার আশঙ্ক অনেকাটাই বাড়ছে।
[আরও পড়ুন: ‘ঋষিসুলভ’ আচরণে রেগে লাল বরিস, অন্তর্কলহে বেআব্রু ব্রিটিশ শাসকদল]
গত মার্চে ক্রেমলিনে এক সাক্ষাৎকেরে পুতিন সাফ জানান, ইউক্রেন ‘ডিপ্তিটেড ইউরেনিয়াম’ দিয়ে তৈরি গুলি সরবরাহ করছে ব্রিটেন। তারই পালটা বেলারুশে আণবিক অস্ত্র মোতায়েন করার সিদ্ধাম্ত নিয়েছেন তিনি। এদিকে, আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলিকে হুমকি দিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কো। তাঁর কথায়, আগ্রাসনের জবাব দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাড়হিম কড়া বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “হিরোশিমা-নাগাসাকিতে ব্যবহৃত পরমাণু বোমার থেকে অনেকটাই শক্তিশালী রুশ হাতিয়ার।”
কেন পুতিন পরমাণু হামলা চালানোর একগুঁয়ে জেদ নিয়ে চলেছেন? আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের অভিমত, যে-যুক্তিতে বাকি বিশ্ব পুতিনের সম্ভাব্য পরমাণু হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কিত, সেই যুক্তিবোধ রুশ প্রেসিডেন্টের কাজ করছে না। কারণ তিনি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধকে রাশিয়ার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হিসাবে দেখছেন। অর্থাৎ, ইউক্রেনের এই যুদ্ধ তাঁকে জিততেই হবে। যুদ্ধ জিততে না পারলে মৃত্যুই তাঁর কাছে শ্রেয়। যুদ্ধজয় ও মৃত্যুর মাঝামাঝি কিছু পুতিনের কাছে নেই। সেই কারণে পুতিন পরমাণু হামলার পরিণতির কথাটা বিবেচনা করতে নারাজ।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা ফেলে আমেরিকা। প্রায় ১৬ কিলোটন বা ১৬ হাজার টন টিএনটি বিস্ফোরকের শক্তি নিয়ে হিরোশিমাকে মুহূর্তে নরককুণ্ড বানিয়ে তুলেছিল ওই বোমা। তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম-২৩৫ ধাতু দিয়ে তৈরি ওই অস্ত্রের অভিশাপ আজও বহন করে চলেছে শহরটি।