সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়ার বিরুদ্ধে এবার জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। মঙ্গলবার রাশিয়ার একটি আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে। একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউলিয়ার বিরুদ্ধে। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছেন ইউলিয়া। নাভালনির অসম্পূর্ণ কাজ পূরণ করার অঙ্গীকার নিয়েছেন তিনি। বিরোধী নেত্রী হিসাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টক্কর নেওয়াই এখন তাঁর লক্ষ্য। বিশ্লেষকদের মতে, এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কারণেই হয়তো ইউলিয়াকে নিশানা করছে মস্কো।
চলতি বছরের গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার জেলে মৃত্যু হয় রাশিয়ার বিরোধী নেতা তথা পুতিনের সমালোচক নাভালনির। কিন্তু মনোবল হারাননি স্ত্রী ইউলিয়া। চোখের জল মুছে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। স্বামীর মৃত্যুর ছয় দিনের মাথাতেই রাজনীতিতে নাম লেখানোর সিদ্ধান্ত নেন ইউলিয়া। যা মোটেই ভালো নজরে দেখছে না ক্রেমলিন। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যুক্ত হওয়ার অভিযোগে নাভালনির স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জানানো হয়েছে, ইউলিয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের আবেদন মঞ্জুরের পাশাপাশি দুমাসের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: দিল্লি আগের মতোই কৌশলগত অংশিদার, মোদির রুশ সফর নিয়ে কৌশলী বার্তা ওয়াশিংটনের]
রুশ আদালতের এই নির্দেশ নিয়ে মুখ খুলেছেন নাভালনায়া। রুশ প্রেসিডেন্টকে তোপ দেগে বলেন, "ভ্লাদিমির পুতিন একজন খুনি। ও একজন যুদ্ধপরাধি। ওর জেলে থাকা উচিত।" মস্কোর এই পদক্ষেপের কড়া নিন্দা করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ। মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডেলে তিনি বলেন, "এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের বিরোধী।" গত এপ্রিল মাসেই টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন নাভালনায়া।
বলে রাখা ভালো, ২০ বছরের বিবাহিত জীবনে সমস্ত রকম পরিস্থিতিতে নাভালনির পাশে থেকেছেন ইউলিয়া। তিনিই নাকি ছিলেন নিহত রুশ বিরোধীনেতার অন্যতম শক্তি। ক্যামেরার সামনে খুব একটা আসতে চাইতেন না ইউলিয়া। প্রচারের আলো থেকে সব সময় দূরে থাকতেন। কিন্তু এবার নিজেকে বদলে ফেলেছেন ইউলিয়া। পুতিনের চোখে চোখ রেখে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তিনি। এখন তাঁর প্রধান কাজ রাশিয়ার বিরোধী দলকে নেতৃত্ব দেওয়া। নাভালনির মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই রুশ প্রেসিডেন্টের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়ে ছিলেন ইউলিয়া।