সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবান সরকারকে এখনই স্বীকৃতি দিতে নারাজ রাশিয়া (Russia)। শনিবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, বর্তমানে তালিবান সরকারকে মান্যতা দেওয়ার প্রশ্নই নেই।
[আরও পড়ুন: দেড় দশকের শাসনের অবসান, জার্মানির নির্বাচনে পরাজিত অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের দল]
১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালিবান। তারপরই তাদের মুখে শোনা যায়, দেশগঠন, শান্তি ও ক্ষমার কথা। শুরুর দিকে কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেছিলেন যে বন্দুকের জোরে ক্ষমতা দখল করলেও দেশ চালাতে এবার কিছুটা হলেও নিজেদের বদলে নেবে তালিবরা। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, ততই সেই ধারণা ভ্রান্ত প্রমাণিত করে আসল চেহারা প্রকাশ করেছে তালিবান।
সম্প্রতি, তালিবান কারাপ্রধান মোল্লা নুরুদ্দিন তোরাবি বলেছে, শরিয়ত মেনে তৈরি করা হবে দেশের আইন। অপরাধের শাস্তি হিসেবে ফিরিয়ে আনা হবে হাত-পা কেটে নেওয়া বা প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা। পরের দিনই হেরাটের রাস্তায় দেখা মেলে ক্রেনের মাথায় ঝুলছে মৃতদেহ। এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তীব্র ভাষায় এহেন কাজের নিন্দা করেছে আমেরিকা। একইসঙ্গে রাশিয়াও জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা এখনই ভাবছে না তারা।
১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের (Afghanistan) তালিবান সরকারকে পাকিস্তান-সহ প্রাচ্যের তিনটি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল। বাকি বিশ্ব জঙ্গিদের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ ছিল। এবার নতুন করে তালিবান সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই প্রশ্নটা উঠে গিয়েছে, আদৌ কি কোনও দেশ স্বীকৃতি দেবে আফগানিস্তানকে? রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার অধিবেশনে তালিবান সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা যাতে রাখা হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী। সের্গেই লাভরভ বলেন, ”যে প্রতিশ্রুতি ওরা দিয়েছে তা পালন করা হবে কিনা, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের কাছে এটাই সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে।”
দুই দশক পরে গত আগস্টে আফগানিস্তান দখল করে তালিবান। শুরুতে তারা বলেছিল, নারীর অধিকার রক্ষা-সহ সামগ্রিক ভাবেই আফগান মুলুকে স্থিতাবস্থা ও শান্তি ফেরাবে তারা। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে, ততই পরিষ্কার হয়েছে তালিবান আছে তালিবানেই। জেহাদিরা একটুও বদলায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে সংশয়ে গোটা বিশ্বই। তবে বিশ্ব দরবারে তালিবানের হয়ে রীতিমতো ওকালতি করছে কাতার, পাকিস্তান ও চিনের মতো দেশগুলি।