shono
Advertisement

ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে সরল রাশিয়া, আমেরিকাকে জবাব পুতিনের

ফের বাড়ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা।
Posted: 08:44 AM Feb 03, 2019Updated: 08:44 AM Feb 03, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি করেছিল আমেরিকা ও রাশিয়া। যাতে কিছুটা হলেও উত্তেজনার পারদ কমেছিল। কিন্তু মার্কিন চাপের পালটা হিসাবে এবার ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা জানালেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও।

Advertisement

[বাতিল আইএনএফ চুক্তি, রাশিয়া-আমেরিকার মধ্যে ফের শুরু ঠান্ডা লড়াই!]

১৯৮৭ সালের মধ্যপাল্লার পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র (আইএনএফ) চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পরস্পরের বিরুদ্ধে আঙুল তুলছে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দুই দেশ। গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, রাশিয়া চুক্তির শর্ত না মানলে তাঁরা সরে আসবেন। শুক্রবার সেই মর্মে তিনি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা জানান। শনিবার রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুর সঙ্গে সম্প্রচারিত বৈঠকে এ কথা ঘোষণা করেন পুতিন। তাঁর বক্তব্য, আমাদের মার্কিন সঙ্গীরা চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। তাই আমরাও চুক্তি রূপায়ণে এখন আর দায়বদ্ধ থাকতে পারব না। পাশাপাশি, নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে তাঁরা আগ বাড়িয়ে আমেরিকার সঙ্গে কথা বলবেন না বলেও পুতিন জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কটাক্ষ, “যতক্ষণ না মার্কিন বন্ধুদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়, আমরা অপেক্ষা করব। আমরা দেখতে চাই এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কবে ওঁরা সমান মর্যাদা দিয়ে সদর্থক আলোচনা করতে তৈরি হয়েছেন।”

উল্লেখ্য, সোভিয়েত জমানার শেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান এই চুক্তি করেছিলেন। এই চুক্তির আওতায় পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পাল্লার সব ধরনের ক্রুজ মিসাইল নিষিদ্ধ করা হয়। যার জেরে অস্ত্রভাণ্ডার গড়ার প্রতিযোগিতায় রাশ টানা গিয়েছিল। আতঙ্ক কাটিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল দু’টি মহাযুদ্ধের দুঃস্বপ্ন ভুলতে না পারা ইউরোপের মানুষ। ওই সময় বিভিন্ন পশ্চিমি দেশের রাজধানী লক্ষ্য করে মোতায়েন ছিল রুশ আণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। চুক্তির ফলে সেই সংকট থেকে মুক্তি মেলে। কিন্তু ওই চুক্তিতে চিন-সহ অন্য কোনও দেশের ক্ষেত্রে এমন কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। শুক্রবার ট্রাম্প জানান, ছ’মাসের মধ্যে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে। তাঁর দাবি, সমস্ত পক্ষকে একটি বড়, সুন্দর ঘরে বসিয়ে নতুন চুক্তি করতে চান। কিন্তু তার আগে আমেরিকাকে ‘অসহায়’ অবস্থায় রাখার অপচেষ্টা তিনি সহ্য করবেন না।

বিতর্কের শুরু রাশিয়ার নোভাটর মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ নিয়ে। ওয়াশিংটনের দাবি, তার জেরে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। অন্যদিকে মস্কো বলছে, কোনও শর্ত ভাঙা হয়নি। এমনকী, গত মাসে বিদেশি সাংবাদিক ও বিভিন্ন দূতাবাসের সেনা আধিকারিকদের ডেকে ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োগ-পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত জানায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তাতে লাভ হয়নি। রাশিয়ার দাবি, ওয়াশিংটন নিজেরাই বহুবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। কূটনৈতিক দৌত্যের মাধ্যমে চুক্তি বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেও লাভ হয়নি বলে জানান লাভরভ। তাই আমেরিকার মতোই রাশিয়া মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প গ্রহণ করবে বলে পুতিন স্পষ্টভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে বিপুল অর্থ ব্যয়ে কোনও অস্ত্র প্রতিযোগিতায় তাঁরা শামিল হবেন না বলেও মন্তব্য করেন পুতিন। তবে ইউরোপ বা অন্যত্র রাশিয়া স্বল্প ও মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করে, রাশিয়াও তার জবাব দেবে বলে তিনি হুমকি দিয়েছেন। আমেরিকাকে সমর্থন করলেও চুক্তি বাতিলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাটো গোষ্ঠীর দেশগুলি। পাশাপাশি, ২০২১-এ এসটিএআরটি চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এই টানাপোড়েনের জেরে ওই চুক্তির মেয়াদ বাড়া নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাশিয়া-আমেরিকার কাছে সর্বোচ্চ কতগুলি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে, তা নিয়েই ওই চুক্তি হয়েছিল।

[আমেরিকায় পোলার ভর্টেক্স-এর তাণ্ডব, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার