সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে (Vladimir Putin) ‘খুনি’ বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। সেই সঙ্গে অভিযোগ করলেন, গত বছরের শেষে মার্কিন নির্বাচনে (US Election 2020) কলকাঠি নেড়ে বাইডেনকে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন পুতিন। এর মূল্য চোকাতে হবে তাঁকে। এভাবেই বুধবার রীতিমতো আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গেল বাইডেনকে। তাঁর এমন মন্তব্যে প্রবল চটেছে রাশিয়া। ইতিমধ্যেই আমেরিকার রুশ রাষ্ট্রদূতকে মস্কোতে ফেরত আসার নির্দেশ দিয়েছে পুতিন প্রশাসন। সব মিলিয়ে আরও একবার দুই দেশের সম্পর্কের চরম অবনতি লক্ষ করা গিয়েছে।
গত মঙ্গলবারই ১৫ পাতার এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। সেই রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছিল, গত নভেম্বরে নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে কলকাঠি নেড়েছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘এবিসি নিউজ’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ৭৮ বছরের বাইডেন বলেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যেভাবে নির্বাচনে জেতাতে চক্রান্ত করেছিলেন, সেজন্য মূল্য চোকাতে হবে তাঁকে। কেবল এটুকুই নয়। এরই পাশাপাশি তাঁকে ‘খুনি’ বলেও আক্রমণ করেন পুতিন। রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনিকে বিষ খাইয়ে খুনের জন্য তিনি অভিযুক্ত করেন পুতিনকে। তাঁর এমন মন্তব্য ঘিরে ফের দু’দেশের ‘ঠান্ডা যুদ্ধে’র আবহই যেন ফিরে আসতে দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
[আরও পড়ুন: সমলিঙ্গের বিয়েতে সম্মতি না দেওয়া ‘অসাংবিধানিক’, ঐতিহাসিক রায় জাপানের আদালতের]
ঠিক কী বলা হয়েছে মার্কিন গোয়েন্দাদের রিপোর্টে? দাবি করা হয়েছে, বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে ব্যবসা সংক্রান্ত ভুয়ো অভিযোগ আনার চেষ্টা করছিলেন পুতিন। উদ্দেশ্য ছিল, ভোটের আগে বাইডেনের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। এতে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠদেরও সমর্থন ছিল। রিপোর্টের দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়ার দূতাবাসের তরফে ফেসবুকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ”মার্কিন গোয়েন্দাদের তৈরি করা নথিতে একগুচ্ছ ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে। দাবি করা হয়েছে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের।”
রাশিয়ার তরফে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, কোনও উপযুক্ত প্রমাণ বা তথ্য ছাড়াই এমন অভিযোগ করছে ওয়াশিংটন। পরে ফের বাইডেন বিতর্ক আরও উসকে দেন পুতিনকে আক্রমণ করে। এই মন্তব্যে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট মস্কো। ওয়াশিংটনে অবস্থিত রুশ দূতাবাস থেকে দেশে ফেরত আসতে বলা হয়েছে রাষ্ট্রদূত আনাতলি আনতোনভকে। রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ওই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে পরিস্থিতি নিয়ে। এদিকে মঙ্গলবারই বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়েছিল, দ্রুত মস্কোর উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা ভাবছে আমেরিকা। মনে করা হচ্ছিল বাইডেন জমানায় হয়তো উন্নতি হতে পারে দুই দেশের সম্পর্কে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতিতে সেই সম্ভাবনা অন্তর্হিত হয়ে সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।