সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine Conflict) আবহে রাশিয়াকে আগেই ভাতে মারার কৌশল নিয়েছিল আমেরিকা (USA)। পুতিনের দেশের উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়ানো হয়েছিল। তবে এটুকুতেই নিজেদের পদক্ষেপ সীমাবদ্ধ রাখেনি বাইডেন প্রশাসন। বরং নিজেদের বন্ধুদেশগুলির সমর্থন নিয়ে আরও কোণঠাসা করার পথে হেঁটেছে তারা। এবার আন্তর্জাতিক লেনদেন সংস্থা SWIFT ব্যবহারে রাশিয়ার (Russia) উপর নিষেধাজ্ঞা জারির তোড়জোড় করছে আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি-সহ ৭ দেশ। একযোগে তারা ইউরোপীয় কমিশনকে চিঠি পাঠাচ্ছে বলে খবর। কমিশনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে SWIFT-এর মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন আর করতে পারবে না পুতিনের দেশ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কী এই SWIFT? এই প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারের সুবিধা রাশিয়ার থেকে কেড়ে নিলে তারা ঠিক কতটা বিপদে পড়বে? তা একবার সহজে বুঝে নেওয়া যাক। SWIFT অর্থাৎ Society for Worldwide Interbank Financial Telecommunication. নাম থেকেই বোঝা যায়, বিশ্বজুড়ে আর্থিক আদানপ্রদানের একটি মাধ্যম এই সিস্টেম। যাতে মেসেজের মাধ্যমে সহজে লেনদেন করা যায়। বিশেষত এই মাধ্যম খুব সুবিধাজনক সীমান্ত এলাকায় লেনদেনের ক্ষেত্রে। ১৯৭০ সালে ইউরোপীয় দেশগুলি মিলে সীমান্ত বাণিজ্য সহজ করার জন্য তৈরি হয়েছিল এই প্ল্যাটফর্মটি। লক্ষ কোটির বাণিজ্যিক লেনদেন হয় এর মাধ্যমে। এবং খুব সহজে। ২০২০ সালে দেখা যায়, সীমান্ত বাণিজ্য থেকে প্রায় ৩৬ মিলিয়ন ইউরো লাভ করেছে SWIFT।
[আরও পড়ুন: ওষুধ সংস্থার কর্মী সেজে কোটি টাকার প্রতারণা! কলকাতা পুলিশের জালে নাইজেরিয়ার যুবক]
আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলি বাদে রাশিয়াও SWIFT ব্যবহার করে থাকে আমদানি-রপ্তানির জন্য। এখন এই সুবিধা থেকে পুতিনের দেশকে ছাঁটতে চায় পশ্চিমের দেশগুলো। আমেরিকার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, ইংল্যান্ড, কানাডা সকলে মিলে একসঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনকে চিঠি পাঠাচ্ছে। তাতে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব থাকছে। আসলে, সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে সবরকমভাবে চাপে ফেলার কৌশল প্রয়োগে মরিয়া আমেরিকা ও বন্ধুদেশগুলি।
[আরও পড়ুন: সদ্যোজাত সন্তানকে হারানোর পরেও দুরন্ত শতরান! বিষ্ণু সোলাঙ্কির ইনিংসে মুগ্ধ ক্রিকেট দুনিয়া]
কিন্তু SWIFT ব্যবহারে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপলে ঠিক কী সমস্যার মুখে পড়বে তারা? অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খাবে রাশিয়ার রপ্তানি বাণিজ্য। রাশিয়ার তৈরি সামগ্রী বিদেশি কোনও সংস্থা কিনতে চাইলে তাদের অনেক বেশি ব্যয় করতে হবে, SWIFT-এ খরচ তুলনামূলকভাবে কম। ফলে তারা রাশিয়াকে বাদ দিয়ে অন্যান্য দেশের ক্রেতা হওয়ার জন্য বেশি আগ্রহী হতে পারে। তবে আরেকটি দিকও খেয়াল করার মতো। ইউরোপে তেল রপ্তানিকারী সর্ববৃহৎ দেশটি রাশিয়া। ফলে তেল কেনাবেচার সময় রাশিয়ার উপর এই নিষেধাজ্ঞা নিঃসন্দেহে গোটা ইউরোপের অর্থনীতিকে সমস্যার মুখে ফেলতে পারে। তবে আমেরিকা, ইউরোপে নিশ্চয়ই তার বিকল্প ব্যবস্থা করে তারপরই SWIFT-এর বাইরে বের করার পদক্ষেপ নিচ্ছে, এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।