সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধের প্রায় দু’মাস কেটে গেলেও কিয়েভ দখলে ব্যর্থ রাশিয়ার সেনাবাহিনী। আর এতেই যেন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গত বৃহস্পতিবার তুমুল লড়াইয়ের পর মারিওপোল (Mariupol) শহরকে স্বাধীন ঘোষণা করেছেন তিনি। এবার তাঁর বাহিনী লাগাতার অগ্নিবৃষ্টি করছে খারকভ ও ডোনেৎস্কে।
[আরও পড়ুন: ‘মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের POK সফর বেসরকারি ও ব্যক্তিগত’, ভারতের ক্ষোভ সামলাতে বিবৃতি আমেরিকার]
শুক্রবার রুশ বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ইউক্রেনের খারকভ ও ডোনেৎস্ক প্রদেশে প্রায় এক ডজন জায়গায় হামলা চালিয়েছে তাদের বাহিনী। এর আগে খারকভের পাশে ইউক্রেনীয় ফৌজের একটি অস্ত্রভাণ্ডার দখল করার কথা ঘোষণা করেছে মস্কো। সবমিলিয়ে ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ দ্বিতীয় দফায় আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে রুশ সেনাবাহিনী। বিশ্লেষকদের মতে, কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হওয়ার পর পূর্ব ইউক্রেনের সামরিক অভিযান বাড়িয়ে তুলেছে রাশিয়া। গোটা দোনবাস অঞ্চল দখল করাই তাদের উদ্দেশ্য। ইতিমধ্যে জেলেনস্কি বাহিনীর হাতছাড়া হয়েছে মারিওপোল। এবার দোনবাসের পতন হলে তা কিয়েভের জন্য বড় ধাক্কা হবে।
এদিকে, সরাসরি রাশিয়ার জয় মেনে না নিলেও মারিওপোল ‘পরাধীন’ বলে জানিয়েছে কিয়েভ। বন্দর শহরটির সব বাসিন্দাকে অবিলম্বে শহর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মেয়র বাদিম বয়চেঙ্কো। সরকারি টিভি চ্যানেলে তিনি বলেন, “এখন সবাইকে উদ্ধার করতে হবে। মারিওপোলে এখনও অন্তত ১ লক্ষ মানুষ আটকে রয়েছে।” মেয়র বয়চেঙ্কো জানিয়েছেন, তিনি মারিওপোলে নেই। শহরের বাইরে থাকলেও বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে বদ্ধপরিকর তিনি। কিন্তু এ-ও জানান, সব কিছুই এখন পুতিনের হাতে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার অভিযোগে ক্রমে চাপ বাড়ছে রাশিয়ার উপর। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের হাইকমিশনার মিশেল ব্যাকলেট জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত তাঁদের হাতে যে রিপোর্ট রয়েছে, তাতে স্পষ্ট, সাধারণ মানুষকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে রুশ বাহিনী। দপ্তরের মুখপাত্র রবীনা শামদাসানি বলেন, “বুচায় এমন একটি পরিবার নেই, যাদের কেউ খুন হননি।” এদিকে, গোটা বিশ্বের নিন্দার মুখেও অবিচল পুতিন। তিনি বুচা হত্যাকাণ্ডে জড়িত রুশ বাহিনীকে সম্মানিত করেছেন। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বক্তব্য, “পরিস্থিতিতি জা দাঁড়িয়েছে তাতে ২০২৩ সাল পর্যন্তও যুদ্ধ চলতে পারে।” অর্থাৎ এ যুদ্ধ এখনই শেষ হওয়ার নয়।