সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই থামছে না রাশিয়া ও ইউক্রেনের (Ukraine) যুদ্ধ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর শত চেষ্টা বিফল করে নিজের অবস্থানে অনড় যুযুধান দুই পক্ষ। মস্কোকে কোণঠাসা করতে একগুচ্ছ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ একাধিক দেশ। যার জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁপন ধরিয়েছে অপরিশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধি। এহেন পরিস্থিতিতে বাজারে তেলের জোগান দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
[আরও পড়ুন: জেলেনস্কির বক্তৃতায় হাততালির ঝড়! ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পাচ্ছে ইউক্রেন!]
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসে ‘ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি’। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভারসাম্য বজায় রাখতে ৬০ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের জোগান দেবে সংস্থাটির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি। এর অর্ধেক দেবে আমেরিকা। এদিনের বৈঠক শেষে বাইডেন বলেন, “আমি ঘোষণা করছি যে আরও ৩০টি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ৬০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল জোগান দেওয়া হবে। এই উদ্যোগে আমেরিকা নেতৃত্ব দেবে। আমরা ৩০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ছাড়ব। প্রয়োজনে জোগান আরও বাড়াতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন।” বলে রাখা ভাল, বিভিন্ন তেল উৎপাদনকারী দেশের মিলিত উদ্যোগে তৈরি হয়েছে সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণে এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ ইউক্রেনে প্রবেশ করে রুশ ফৌজ। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে ভয়ংকর লড়াই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শিক্ষা দিতে অন্য আর্থিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানান, কয়েকটি রুশ ব্যাংককে ‘সুইফট’ থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ওই ব্যাংকগুলি গোটা বিশ্বে আর কাজ করতে পারবে না। ধাক্কা খাবে রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানি।
বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় জোগানদাতা রাশিয়া। বিশেষ করে মস্কোর গ্যাস সাপ্লাইয়ের উপর নির্ভরশীল জার্মানির মতো ইউরোপের দেশগুলি। ফলে স্বভাকিভাবেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ধাক্কা খাচ্ছে তেলের জোগান। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০৭ ডলার। এই হারে দাম বাড়লে বিপাকে পড়বে বহু দেশ। তবে ‘ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি’ তেলের জোগান বাড়ালে বাজার কিছুটা স্বস্তি পাবে।