সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুর্দমনীয় রুশ বাহিনীর সামনে রুখে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেন (Ukraine)। দিন ছয়েকের যুদ্ধ শেষেও কিয়েভ দখল করতে পারেনি পুতিন বাহিনী। ডেভিড বনাম গোলিয়াথের এই অসম লড়াই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনুঘটক হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। এহেন পরিস্থিতিতে এবার প্রকাশ্যে এসেছে এক হাড়হিম করা তথ্য। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নাকি এবার অত্যন্ত ভয়ানক ‘ভ্যাকিউম বম্ব’ ব্যবহার করেছে রাশিয়া।
[আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে ভারত, রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়া ও ইউক্রেনকে হিংসা থামানোর বার্তা নয়াদিল্লির]
সোমবার আমেরিকায় নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওকসানা মারকারোভা মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারপরই তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনে একটি ভ্যাকিউম বোমা ব্যবহার করেছে রাশিয়ার সেনা। মারকারোভার কথায়, “আজ ওরা (রাশিয়া) একটি ভ্যাকিউম বোমা ব্যবহার করেছে। ইউক্রেনের প্রচণ্ড ক্ষতি করতে চাইছে রাশিয়া।” বলে রাখা ভাল, গতকাল বেলারুশে টানা ৫ ঘণ্টা বৈঠক হয় ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে। দু’পক্ষই দ্বিতীয় দফা আলোচনার জন্য রাজি হয়েছে বলে রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক সূত্রের খবর। তবে বৈঠক শেষ হতেই ফের রাশিয়া হামলা চালিয়েছে বলে খবর। কিয়েভ ও খারকভে আছড়ে পড়ছে মিসাইল ও গোলা। ধসে পড়ছে বাড়িঘর। দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। এহেন পরিস্থিতিতে ভয়ানক ‘ভ্যাকিউম বম্ব’ ব্যবহার করার দাবি চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
কী এই ‘ভ্যাকিউম বম্ব’? কেনই বা এই হাতিয়ার এত ভয়ানক? সমর বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্যাকিউম বম্ব আসলে একটি থারমোবেরিক বোমা। অর্থাৎ এই বোমা আশপাশের বাতাস থেকে সমস্ত অক্সিজেন শুষে নেয়। তারপরই ঘটে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। তৈরি হয় বিরাট অগ্নিগোলক। বিস্ফোরণে প্রচণ্ড উত্তাপের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয় ভয়ংকর শক ওয়েভ। যার গতি এত তীব্র যে বাড়িঘর থেকে মানুষ– সমস্ত কিছু মুহূর্তের মধ্যে খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ওই বোমার আঘাতে এতটাই উত্তাপ ও শক ওয়েভ তৈরি হয় যা একটি মানুষকে মুহূর্তে বাষ্পে পরিণত করে। ধ্বংস করার ক্ষমতার নিরিখে ভ্যাকিউম বোমার কাছে আর পাঁচটা সাধারণ বোমা শিশুমাত্র।
এদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নামের দুই মানবাধিকার সংগঠন দাবি করেছে, ইউক্রেনে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করছে রুশ ফৌজ। সাধারণত, বিমান থেকে ছোঁড়া হয় ক্লাস্টার বোমা। এমন একটি বোমার পেটের মধ্যে থাকে বেশ কয়েকটি ছোট বোমা। বিমান থেকে ছোঁড়ার পর মূল বোমার পেট থেকে বেরিয়ে বিরাট এলাকায় ছড়িয়ে পরে বিস্ফোরকগুলি। স্টিলের টুকরোর আঘাতে মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় মানুষ থেকে বাড়িঘর। এহেন ভয়াবহ পরিণতির জন্য বহু দেশই মানবিকতার খাতিরে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করে না। কিন্তু এবারের লড়াইয়ে রাশিয়া নাকি কোনও হাতিয়ার ব্যবহারেই পিছপা হচ্ছে না। তবে এই বিষয়ে এখন মুখ খোলেনি আমেরিকা। ভ্যাকিউম বোমা ব্যবহার করার কোনও খবর নেই বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি।