সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দশ মাস ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাচ্ছে রাশিয়া। লড়াইয়ে শক্তিক্ষয়ের পাশাপাশি আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলির নিষেধাজ্ঞায় জোর ধাক্কা খেয়েছে দেশটির অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতে ফের ‘বন্ধু’ ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছে রাশিয়া। কমপক্ষে ৫০০টি পণ্য আমদানি করতে চেয়ে সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ‘অনুরোধ’ জানিয়েছে মস্কো বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর।
রয়টার্সের দাবি, ভারত থেকে গাড়ি, উড়োজাহাজ ও ট্রেনের যন্ত্রাংশ-সহ পঁচশোটি পণ্য আমদানি করতে চাইছে রাশিয়া। এছাড়া, কলকারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ, বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল, ধাতব ও রাসায়নিক সামগ্রীর মতো বিভিন্ন উপকরণ ওই তালিকায় রয়েছে। আমেরিকা ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলির চাপানো নিষেধাজ্ঞার জেরে সেই সমস্ত জায়গা থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করতে পারছে না মস্কো। তাছাড়া, ইউক্রেনের পাশে দাড়িয়ে রাশিয়াকে নিজে থেকেই পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে অনেক সংস্থা। দেশটি থেকে চলে গিয়েছে বহু গাড়ি নির্মাতা। বিদেশি যন্ত্রাংশেপর অভাবে বিপাকে পড়েছে রুশ বিমান সংস্থাগুলি। তাই বিকল্প উৎস খোঁজতে এই পদক্ষেপ করেছে পুতিন প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: ‘ভারত-চিন সম্পর্কে নাক গলাবেন না’, মার্কিন আধিকারিককে হুঁশিয়ারি বেজিংয়ের]
রয়টার্স প্রচারিত খবর সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি দিল্লি। গত ৭ নভেম্বর রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। সে সময়ই পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার আবহে দ্বিপাক্ষিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্রের খবর। তবে ঠিক কোন কোন পণ্য, কতটা পরিমাণে মস্কো আমদানি করতে চেয়েছে, সে বিষয়ে বিষয়ে বিশদ তথ্য মেলেনি। এই বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রক সমর্থিত ‘ফেডারেশন অফ এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন’-এর প্রধান অজয় সহায় রয়টার্সকে বলেন, “রাশিয়ায় পণ্য রপ্তানির বিষয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ ভারতীয় সংস্থাগুলি। আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ার ভয় রয়েছে তাদের।”
উল্লেখ্য, অমেরিকার সঙ্গে সুম্পর্ক থাকলেও ইউক্রেন ইস্যুতে ‘বন্ধু’ রাশিয়ার (Russia) পাশেই দাঁড়িয়েছে ভারত। বাইডেন প্রশাসনের চাপ উড়িয়ে কম দামে মস্কো থেকে জ্বালানি তেল কিনছে নয়াদিল্লি। এছাড়া, ভারতীয় সেনার সবচেয়ে বড় অস্ত্রের জোগানদাতা রাশিয়া। তাই রাশিয়ায় বেশি করে পণ্য রপ্তানি করে ‘ব্যালেন্স অফ ট্রেড’ বা আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য কিছুটা নিজেদের পক্ষে রাখার চেষ্টা করছে মোদি সরকার।