সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাইরে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। তা নেভাতে রীতিমতো ব্যস্ত দমকলকর্মীরা। বিপদ এড়াতে বের করে আনা হচ্ছে হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদেরও। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করেই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার সারলেন চিকিৎসকরা। তাও আবার ‘ওপেন হার্ট সার্জারি’। সম্প্রতি এমনই কীর্তি স্থাপন করেছেন রাশিয়ার (Russia) কয়েকজন চিকিৎসক এবং নার্স। আর এই খবর সামনে আসতেই গোটা বিশ্ব তাঁদের কুর্নিশ জানিয়েছে।
বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি রাশিয়ার একেবারে পূর্বের অঞ্চল ব্লাগোভেসচেন্সকের (Blagoveshchensk)। হাসপাতালের নাম জানা না গেলেও সেটি তৈরি হয়েছিল ১৯০৭ সালে। রাশিয়া তখন জারদের অধীনে। গত শুক্রবার সেখানেই বিধ্বংসী আগুনটি লাগে। ছাদের অংশ থেকে আগুন ছড়াতে শুরু করে গোটা হাসপাতালে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলেও আসে দমকল। শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। হাসপাতাল থেকে প্রায় ১২৮ জনকে নিরাপদে বেরও করে আনা হয়।
[আরও পড়ুন: হুঁশহীন নাচ, নাচতে নাচতেই মৃত্যু! ‘ডান্সিং প্লেগ’ আজও ইতিহাসের পরম বিস্ময়]
কিন্তু ওই সময়ই অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন চিকিৎসকরা। এক রোগীর ওপেন হার্ট সার্জারি করছিলেন তাঁরা। আর সেকারণে মাঝপথে অস্ত্রোপচারও ছাড়তে পারেননি। এই সময় আগুন নেভানোর পাশাপাশি ওই অপারেশনেও সাহায্য করেছেন দমকলকর্মীরা। অপারেশন থিয়েটারে যাতে ধোঁয়া না ঢোকে, সেজন্য একাধিক বড় ফ্যানের ব্যবহার। পাশাপাশি বিদ্যুতের সংযোগ ঠিকঠাক রাখতে বিশেষ কেবল তারের ব্যবহার, সমস্ত কিছুর ব্যবস্থাই করেন দমকলকর্মীরাই।
রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ছাদের অংশটি পুরোপুরি কাঠের তৈরি হওয়ায় দ্রুত গতিতে আগুনটি ছড়াচ্ছিল। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে আগুন নেভানোর কাজ। আর সেই সময়ই চলছিল ওই অস্ত্রোপচারটি। তবে ঘটনায় কেউ আহত হননি। পাশাপাশি ওই অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তারপরই রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই দুর্দান্ত কাজের জন্য ওই চিকিৎসক-নার্সদের পাশাপাশি দমকলকর্মীদেরও প্রশংসা করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। ওই চিকিৎসকদের একজন এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমাদের সেসময় কিছু করার ছিল না। ওই অস্ত্রোপচারটি করতেই হত।”