বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির আবহে (Russia-Ukraine war) ভারতের রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্র সরকার জানিয়েছিল, ভারত নিজেদের স্বার্থের কথাই ভাববে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত দেশের স্বার্থরক্ষার জন্য নাকি সরকারের ঘনিষ্ঠ কর্পোরেট সংস্থার স্বার্থের কথা মাথায় রেখে, সেই প্রশ্ন তুলে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার।
মাত্র এক বছরের মধ্যেই রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ প্রায় তিরিশ গুণ বৃদ্ধি করা হলেও তাতে দেশের সাধারণ মানুষের কী লাভ হয়েছে, সেকথা জানতে চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, এতে যে দুটি বড় বাণিজ্যিক সংস্থার লাভ হয়েছে সেই তথ্য তুলে ধরে জয়শংকরকে দীর্ঘ দু’পাতার চিঠিতে বিঁধেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটকের সর্বশেষ জনমত সমীক্ষায় কঠিন লড়াইয়ের ইঙ্গিত, কে এগিয়ে?]
জহর লিখেছেন, এহেন সিদ্ধান্তে দেশের সাধারণ মানুষ যারা পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থ ব্যহার করে তাদের কোনও সুবিধা হয়নি। বরং গুজরাটের দুই বড় রিফাইনারি সংস্থা বিপুল লাভের মুখ দেখেছে। জনসমক্ষে মুখ রক্ষা করতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক কর তুলে নেওয়ার কথা বলেছে ঠিকই। কিন্তু তাতে আমাদের দেশের কি আদৌ কোনও লাভ হয়েছে? আন্তর্জাতিক মহল মহল থেকে ভারতের বিরুদ্ধে রাশিয়ার (Russia) অপরিশোধিত তেল শোধন করে ইউরোপের দেশগুলিতে চড়া দামে পাঠানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। তা উল্লেখ করে মন্ত্রী সরাসরি কেন এ বিষয়ে জবাব দিচ্ছেন না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের সাংসদ।
রাশিয়ার তেল বহনের জন্য আচমকাই মুম্বইয়ের একটি সংস্থা ৫৪টি ট্যাঙ্কার কীভাবে কিনে ফেলল, এরা কারা সেই বিষয়েও যে রহস্য রয়েছে–তা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রশ্ন উঠছে বলে উল্লেখ করে জয়শঙ্কররের কাছে এই সমস্ত প্রশ্নের সরাসরি উত্তর চেয়েছেন জহর। তাঁর চিঠিতে যে সমস্ত প্রশ্ন উঠে এসেছে, তাতে বিরোধী শিবিরের একাংশ মনে করছে, কেন্দ্র রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে মুখে দেশের স্বার্থের কথা বললেও আদতে তাদের বন্ধু কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়ে তাদের কাছ থেকে নির্বাচনী খরচ জোগাড়ের রাস্তা সুগম করছে।