সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনেপ্রাণে ভারতীয়রা চাইছিলেন রাশিয়ার (Russia) লুনা ২৫-কে (Luna-25) টেক্কা দিয়ে আগে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করুক চন্দ্রযান ৩। শেষমুহূর্তে কি সেটাই ঘটতে চলেছে? শনিবার সন্ধ্যায় রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেষ মুহূর্তে লুনায় যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে। আগামিকাল, সোমবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে লুনার নামার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই নাটকীয় পরিস্থিতি। রসকসমসের দু’লাইনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অবতরণের আগে লুনাকে অন্তিম কক্ষপথে ঠেলতে গিয়ে জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে চন্দ্রযানটির স্বয়ংক্রিয় স্টেশনে। ফলে এই পরিস্থিতিতে যানটি অবতরণের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
এই যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য লুনার চাঁদে অবতরণ বিলম্বিত হবে কি না, সে ব্যাপারে চুপ রয়েছে রসকসমস। গত ৫০ বছরের মধ্যে রাশিয়ার এই প্রথম চাঁদ অভিযানকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে মস্কোতেও। রসকসমসের বিজ্ঞানীরা আগেই ঘোষণা করেছিলেন, এই ধরনের অভিযানের সাফল্যের সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ। যদি শেষপর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে রাশিয়া চাঁদে (Moon) লুনা-২৫কে নামাতে না পারে তাহলে সেটা এই মহাকাশ যুদ্ধে ভারতের সামনে একটি বিরাট জয়ের সুযোগ তৈরি করে দেবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের বিক্রম ল্যান্ডার ২৩ আগস্ট সফলভাবে নামতে পারলে বিজ্ঞানকে ছাপিয়ে কূটনীতিতেও সেটা একটা বড় প্রাপ্তি হিসাবে দেখা হবে।
[আরও পড়ুন: জমা জলেই বিপত্তি! ডেঙ্গু আক্রান্ত সৃজিত মুখোপাধ্যায়]
তবে কোনওভাবেই ভারতীয় মহাকাশযানটির গতি বাড়িয়ে দিয়ে অবতরণের দিন এগিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ইসরোর প্রাক্তন প্রধান কে শিভন। শিডিউল মেনে আগামী ২৩ আগস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ চাঁদের বুকে সফট ল্যান্ডিং হওয়ার কথা বিক্রমের।
চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় সফট ল্যান্ডিংয়ের জন্য বেগ কমাতে শুক্রবার প্রথম ডিবুস্টিং প্রক্রিয়া শুরু করে বিক্রম। ইসরোর প্রাক্তন প্রধান জানিয়েছেন, বিক্রম নামের ল্যান্ডারটি স্বয়ংক্রিয় মোডে চলে গিয়েছে। সেটি আর বেঙ্গালুরুর অফিস থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ডেটা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এবার থেকে বিক্রম নিজেই ঠিক করবে কীভাবে সে যাবে এবং কী কাজ করবে।
শনিবারই রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস লুনা ২৫-এর তোলা প্রথম ছবিটি প্রকাশ্যে এনেছে। লুনা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে থাকা জিমান ক্রেটারের ছবি তুলেছে। এটি চঁাদের বুকে তৃতীয় গভীরতম গর্ত। ১৯০ কিলোমিটারের এই গর্তটি আট কিলোমিটার গভীর। লুনার তোলা ছবিটি প্রকাশ্যে আসার পরই মনে করা হচ্ছিল শেষমুহূর্তে সত্যি সত্যিই ভারতকে টেক্কা দিয়ে দিল রাশিয়া। কিন্তু, সন্ধ্যায় লুনার যান্ত্রিক ত্রুটির খবরটি রসকসমস প্রকাশ্যে নিয়ে আসায় গোটা পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে।