সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে আবার ফিরেছে তালিবানের শাসন। আর গোটা পরিস্থিতিতর উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। এই মুহূর্তে নয়াদিল্লির অবস্থান হচ্ছে 'ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ'। তবে আফগানভূমে স্বার্থরক্ষায় পর্দার আড়ালে তালেবদের সঙ্গে আলোচনার একটা আবছা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলনে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে বাড়ছে প্রতিরোধ, পঞ্জশিরের পর জালালাবাদেও বিক্ষোভের মুখে Taliban]
বুধবার নিউ ইয়র্কে আফগান ইস্যু নিয়ে আলোচনায় বসে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। নিয়মমাফিক বৈঠকে সভাপতির আসনে ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। ওই আলোচনার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হচ্ছে। আপাতত যুদ্ধজর্জর আফগানিস্তান থেকে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরানোই হচ্ছে সরকারের প্রথম কাজ।
তালিবানের প্রতি ভারতের অবস্থান কী হবে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে জয়শংকর বলেন, "এই মুহূর্তে আমরা অন্যদের মতো পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরানোটাই আপাতত সবচেয়ে জরুরি। আফগান জনগণের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অবশ্যই থাকবে। সেদেশে ভারতের বিনিয়োগই আফগানদের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক প্রমাণ করে। আগামীদিনে আফগানিস্তান নিয়ে আমাদের অবস্থান সেসব কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হবে।"
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তালিবানের সঙ্গে বর্তমানে ভারতের কোনও যোগাযোগ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জয়শংকর ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে তালিবানের সঙ্গে অন্তত বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সমঝোতার পথে হাঁটার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, সেদেশে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে নয়াদিল্লি। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যমূল্য প্রায় ১৩৫ কোটি ডলার। তিনি বলেন, "আপাতত কাবুলের পরিস্থিতি কি সেইদিকে নজর রাখছি আমরা। কাবুলে তালিবান ও তাদের প্রতিনিধিরা কাবুলে পৌঁছেছে। ফলে সেখান থেকেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।"
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের (Afghanistan) ৩৪টি প্রদেশেই কোনও না কোনও পরিকাঠামো নির্মাণ করেছে ভারত। এখনও হাতে রয়েছে বেশ কিছু প্রকল্প। কিন্তু দেশটি তালিবানের (Taliban) দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই সেই সব প্রকল্পের সম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা বিশ বাঁও জলে যাওয়ার উপক্রম। কিন্তু সেই প্রকল্পগুলির ব্যাপারে নরম সুরেই কথা বলতে দেখা গিয়েছে তালিবানকে। জেহাদি সংগঠনটির মুখপাত্র সুহেল শাহিন জানিয়েছে, ভারত যদি ওই প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ করতে চায় তাহলে তারা তা করতেই পারে। আর পর্দার আড়ালে নয়াদিল্লিও আফগানিস্তানে দেশের স্বার্থরক্ষার জন্য পদক্ষেপ করছে তা স্পষ্ট।